সওয়ারি: আলিপুরদুয়ারে পথে সৌরভ। ছবি: নারায়ণ দে
চারিদিক সবুজে ঢাকা। পাহাড় আর জঙ্গল ঘিরে রেখেছে শহর আলিপুরদুয়ারকে। তবুও বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া। গরমের দাপট বাড়ছে। এর জন্য যে দূষণই দায়ী বুঝতে পারছেন বাসিন্দারা। কারণ প্রতিদিন শহরে বাড়ছে মোটর সাইকেল, চার চাকার গাড়ি। কাটা তেলে চলা অটো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শহরজুড়ে। ধোঁয়া এবং হর্নে অতিষ্ট হয়ে পড়ছেন শহরের মানুষ। এর থেকে বাঁচতে সপ্তাহে অন্তত একদিন গাড়ির বদলে সাইকেল চালানোর পক্ষে আওয়াজ উঠল আলিপুরদুয়ার শহরে।
শনিবার পয়লা বৈশাখের সকালে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে সাইকেল র্যালি করেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে চৌপথি পর্যন্ত চলে র্যালি। সৌরভবাবু জানান, শহরে দূষণ কমানোর জন্য নজর দিতে হবে বাসিন্দাদের। তিনি বলেন,‘‘তাই জেলাশাসক ও পুরসভার চেয়ারম্যানকে বলেছি সাইকেল চালানোর জন্য আলাদা লেন করে দিতে। রবিবার করে বাসিন্দারা মোটরবাইক বা গাড়ি ব্যবহার না করে সাইকেলে ঘোরাফেরা করলে আগামী দিনে তা শহরের উপকারেই আসবে।’’
দিন দিন বাড়ছে আলিপুরদুয়ারের জনসংখ্যা। তার উপর জেলা শহর হওয়ায় এখন প্রতিদিনই কয়েক হাজার গাড়ি যাতায়াত করে আলিপুরদুয়ারে। পরিবেশপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, জনসংখ্যা, ঘরবাড়ি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরায়ণের জন্য গাছ কাটা পড়ায় কমেছে সবুজও। তাতেই বাড়ছে পরিবেশ দূষণ।
আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “শহরে মোটরবাইকের সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। গাড়ি, অটো থেকে বের হওয়া ধোঁয়া থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ। শহরে উন্নয়ন হলেও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য কোনও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি।’’ তিনি জানান, শহরের রাস্তার ডিভাইডারে গাছ লাগানোর জায়গা নেই। সরকারি খাস জমিগুলোতে পরিকল্পনা করে গাছ লাগানো যেতে পারে। এবং সাইকেল চালালেও কমবে দূষণ।
আলিপুরদুয়ারের আরটিও রির্চাড লেপচা জানান, গত বছর আলিপুরদুয়ারে প্রায় চোদ্দ হাজার গাড়ি রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। তার মধ্যে মোটর বাইকের সংখ্যা প্রায় ন’হাজার। তিনি বলেন, ‘‘বেশী গাড়ি চললে দূষণ বাড়বে। তাই অন্তত এক দিন সাইকেল চালানো গেলেও তাতে দূষণ কমবে। তা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল।
আলিপুরদুয়ারের চিকিৎসক রাজা সাহার বক্তব্য, হর্ন নিয়ে সচেতনতা কম রয়েছে। সপ্তাহে এক দিন সাইকেল চালানো হলে শব্দ দূষণ কমবে। আলিপুদুয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসু জানান, বছর দশেক আগেও এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা থাকত ২৭ থেকে ২৯ ডিগ্রির মধ্যে। বক্সা ও জলদাপাড়া জঙ্গলে ব্যাপক হারে গাছ কাটায় তার প্রভাব পড়েছে পরিবেশে। এখন এপ্রিল মাসে গড় তাপমাত্রা থাকছে ৩০ থেকে ৩২ ডিগ্রি। বিষয়টি উদ্বেগের।