না: পিকনিকে নজরদারি ফুলবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
ফুলবাড়ি ব্যারাজ লাগোয়া এলাকায় পিকনিকের দাপটে কমছে পরিযায়ী পাখির ভিড়। ম্যালার্ড, ফ্যালকেটেড ডাক, নর্দার্ন সভলারের মতো পরিযায়ী এখন আর এখানে খুব একটা দেখা যায় না। অথচ এক সময় প্রচুর পরিমাণে আসত। তবে রুডিসেল ডাক, গাডওয়াল, কমনপোচারের মতো পাখির দল এখনও আসছে। জোরালো শব্দে বক্স বাজিয়ে পিকনিক, অনেকে মিলে মদ্যপান, হুল্লোড় করা, নৌকো নিয়ে পাখিদের কাছে চলে যাওয়ার মতো ঘটনা এখনই বন্ধ করতে না পারলে এই সমস্ত পরিযায়ী পাখির আনাগোনাও ভবিষ্যতে বন্ধ হবে বলে আশঙ্কা। এ সবের হাত থেকে পরিযায়ী এবং এলাকার পরিবেশ রক্ষায় তাই এগিয়ে এসেছে অপটোপিক সংগঠন।
শনিবার ফুলবাড়ি ব্যারাজের ধারে পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালায় তারা। পরিযায়ীর দল যে অংশে ঘোরে ব্যারাজ লাগোয়া ওই এলাকায় এদিন থেকে পিকনিক নিষিদ্ধ করা হয় ব্লক প্রশাসনের তরফে। পুলিশ তরফে নজরদারি চালানো হবে বলেও জানানো হয়।
আগেও পিকনিক বন্ধ করার কথা বলা হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এদিন পিকনিক করতে ফুলবাড়ি ব্যারাজের ওই অংশ দ্বারাবক্স জোতে আসা ব্যক্তিদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। সংগঠনের সদস্যরা ছাড়াও সচেতনতা প্রচারে হাজির ছিলেন ফাঁসিদেওয়ার বিডিও প্রণয় মজুমদার, শিলিগুড়ি এসিপি (ইস্ট) অচিন্ত্য গুপ্ত, এডিএফও জয়ন্ত মল্লিক, ফাঁসিদেওয়া থানার ওসি সঞ্জয় দাস, ফাঁসিদেওয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য চন্দ্রমোহন রায়-সহ অনেকেই। বিডিও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়ে আমরাও উদ্যোগী হব। আরও যাতে পাখি আসে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পিকনিক করতে এদিকে কেউ এলে পুলিশ যেন আটকায়। অনিয়ম দেখলে বাসিন্দা, ব্যবসায়ীরা খবর দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, পাখি শিকারির দলও আনাগোনা করে। মাটিগাড়ার দিক থেকে পোড়াঝাড় হয়ে তারা ঢোকে। বলে অভিযোগ। পুলিশের তরফে এসিপি অচিন্ত্যবাবু জানান, এ ব্যাপারে তারাও নজরদারি চালাবেন। তিনি বলেন, ‘‘গজলডোবায় ইতিমধ্যেই পিকনিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফুলবড়ি ব্যারাজের এই অংশেও সেটা করা দরকার। যে অংশে পাখি আসে সেখানে পিকনিক না-করাই ভাল।’’ তাঁর মত, এই জায়গা বার্ড ওয়াচের জন্য গড়ে তোলা গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে গাইড হিসাবেও কাজ করতে পারবেন।
অপটোপিক সংগঠনের আহ্বায়ক দীপজ্যোতি চক্রবর্তী, সদস্য সন্তু দত্তরা জানান, সাইবেরিয়া, লাদাক-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নভেম্বর মাসের গোড়া থেকেই পরিযায়ীর দল আসতে শুরু করে। ব্যারাজের জলাশয়ের একাংশে তারা কাটায়। অথচ পিকনিক দল, পাখি শিকারিদের দাপটে অনেক পরিযায়ী আসছে না।