অজিত শেখ। নিজস্ব চিত্র
দিল্লির হিংসায় জখম হলেন উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের এক যুবক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির দরিয়াগঞ্জ এলাকায় একদল যুবক তাঁর উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বাড়ি ফেরার পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার রাতে তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকেরা।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, জেলার ন’টি ব্লকের কয়েক হাজার বাসিন্দা দিল্লিতে দিনমজুরি, রাজমিস্ত্রি, নির্মাণশ্রমিকের কাজ-সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন। রাজধানীতে গোলমালের জেরে আতঙ্কে গত এক সপ্তাহে তাঁদের বেশিরভাগ বাড়িতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা বলেন, ‘‘দিল্লির গোলমালে আতঙ্কে অনেকে সেখান থেকে জেলায় ফিরে এসেছেন বলে জানতে পেরেছি। তাঁরা দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় নানা পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রশাসন এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ করবে।’’ প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে খবর, জখম ওই যুবকের নাম অজিত শেখ। বাড়ি ইটাহার থানার সুরুন ১ পঞ্চায়েতের পাঁজল এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দিল্লির দরিয়াগঞ্জ এলাকায় একটি সংস্থায় নির্মাণশ্রমিকের কাজ করতেন। ছুটি কাটিয়ে দু’সপ্তাহ আগেই তিনি কাজে যোগ দেওয়ার জন্য দিল্লিতে যান। অজিত জানান, সহকর্মীদের সঙ্গে দিল্লির চাঁদনিচক এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। তাঁর অভিযোগ, ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি চাঁদনিচক থেকে অটোরিকশায় দরিয়াগঞ্জে যান। অটো থেকে নেমে তিনি হেঁটে নির্মীয়মাণ একটি ভবনের দিকে যাচ্ছিলেন। সেই সময় একদল দুষ্কৃতী পিছন থেকে লাঠিসোটা দিয়ে তাঁর উপরে হামলা চালায়। তিনি রাস্তার পাশে পড়ে যান। দুষ্কৃতীরা ভারী কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে। পুলিশ ও বাসিন্দারা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দিল্লির একটি সেনা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরের দিনই তিনি বাড়িতে রওনা হন।
অজিতের কথায়, ‘‘আমার মাথা ও চোখে গুরুতর চোট লেগেছে। শুক্রবার বাড়ি ফিরেছিলাম। শনিবার ক্ষতস্থানে ব্যথা বেড়ে যায়। এরপর আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দিল্লিতে আর কাজে যোগ দেওয়ার সাহস পাচ্ছি না।’’ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ, বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল পৃথক ভাবে হলেও একই সুরে দাবি করেছেন, রাজ্য সরকার জেলায় কর্মসংস্থান তৈরি করতে ব্যর্থ। সেই কারণে, জেলার ন’টি ব্লকের ৫০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বক্তব্য, ‘‘গত এক দশকে রাজ্য সরকার স্বনির্ভরতার জন্য একাধিক প্রকল্প চালু করেছে। তা সত্বেও জেলার বাসিন্দাদের একাংশ বেশি রোজগারের জন্য ভিন্ রাজ্যে গিয়ে বিভিন্ন কাজ করছেন।’’