পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।—ফাইল চিত্র।
লকডাউনের জেরে দু’মাস ধরে বন্ধ স্কুল। পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে না হওয়ায় স্কুল বাসও ব্যবহার করা হচ্ছে না। অভিযোগ ওঠে, তাও অভিভাবকদের কাছে স্কুলবাসের ভাড়ার কিছু অংশ নিচ্ছে বেসরকারি ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলি। এ নিয়ে শিলিগুড়ির স্কুলগুলিকে ডেকে আলোচনা করলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। স্কুলগুলির তরফে জানানো হয়, চলতি শিক্ষাবর্ষে ফি না বাড়ালেও বাসভাড়া মকুব করা সম্ভব নয়। পরিবহণ ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে উপায় বার করার আশ্বাস দেন গৌতম দেব।
সোমবার শিলিগুড়িতে পর্যটন দফতরের টুরিস্ট লজ মৈনাকে শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন জলপাইগুড়ির কিছু স্কুলের প্রধানদের ডাকেন পর্যটন মন্ত্রী। হাজির হন ৫৫টি স্কুলের প্রধানেরা। ছিলেন মহকুমার প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও। মন্ত্রী ফি না বাড়ানোর এবং লকডাউনে বাসভাড়া না নেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বাসভাড়া নিয়ে নানা বক্তব্য উঠে আসে।
শিলিগুড়ির একটি স্কুলের মালিক নরেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘আমরা এজেন্সির মাধ্যমে বাস চালাই। কিন্তু এজেন্সিগুলির দাবি, বাস ঋণে কেনা বলে মাসিক কিস্তি টানতে হয়, শ্রমিকদের মজুরি দিতে হচ্ছে। কেউ পুরো টাকা মকুব করছে না।’’ সিবিএসই স্কুল মালিকদের সংগঠনের সভাপতি শ্যামসুন্দর আগরওয়াল জানান, বাসভাড়া পুরো মকুব করা সম্ভব নয়।
উত্তরবঙ্গ অভিভাবক মঞ্চের নেতা সন্দীপন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘অভিভাবকেরা বাস পরিষেবা নেবেন কি না, তা নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই জানাতে হয়। কিন্তু লকডাউনেআবেদন জানাতে পারেননি কেউ। তা হলে স্কুল কী ভাবে নিজের মতো ভাড়া ঠিক করতে পারে? অভিভাবক চাইলে তো বাচ্চাকে বাইকে পৌঁছে দিতে পারেন। বাস আবশ্যিক নয়। তা ছাড়া, অনেকে এই খরচ টানতেও পারবেন না।’’ শিলিগুড়ি কলেজপাড়ার বাসিন্দা তথা অভিভাবক অভীক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বাসভাড়া একেবারে মকুব করার দাবি আমরা তুলছি না। তবে ভাড়ার কিছুটা অংশ নেওয়া হোক, এটা বলাই যায়।’’
বাস মালিকদের সংগঠনের সম্পাদক শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুলবাস-পরিষেবার পরিকাঠামো সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন মেনে কোনও শ্রমিককে কাজ থেকে বসিয়ে দিইনি। অনেকেই কিস্তি টানছেন। তাই আলু-পেঁয়াজ কেনার মতো বিষয় এটা নয়।’’ অন্য দিকে, বাস মালিকদের একাংশের দাবি, কিছু স্কুল থেকে বলা হয়েছে, এর পর ছুটির দিনেও ক্লাস হতে পারে।
মন্ত্রী বৈঠকের পর বলেন, ‘‘স্কুলবাসের ভাড়া নিয়ে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যাযের সঙ্গে কথা বলব।’’