সুনসান কলেজ চত্বর। নিজস্ব চিত্র
আশা করা হয়েছিল বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান সূত্র বেরোবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৈঠক না হওয়ায় অচলাবস্থা কাটল না জলপাইগু়ড়ির সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের। সোমবার দুপুরে বৈঠক হবে বলে সময়ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও বৈঠক না হওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে জেলা প্রশাসন ও জেলার পুলিশের যোগসূত্রের অভাবকেই দায়ি করা হচ্ছে৷
গত বৃহস্পতিবার থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল, সোমবার দুপুরে সার্কিট হাউসে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী, কলেজের অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্তারা৷ ওই বৈঠকে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বা এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর উপস্থিত থাকার কথা ছিল৷
কিন্তু সোমবার সকাল থেকেই শোনা যায় যে বৈঠক হবে না। পরে জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে এ দিন আমরা বৈঠক ডাকিনি৷ পুলিশের তরফে নাকি একটা বৈঠক ডাকা হয়েছিল৷ কিন্তু তা হয়নি৷’’ পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘আমার মনে আলোচনায় বসার মত উপযোগী পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নি জন্যই এ দিন বৈঠক হয়নি৷’’
এ দিকে বৈঠক হচ্ছে না জানতে পেরে এ দিন কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতর সাইকেল স্ট্যান্ডে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন কলেজের শিক্ষক ও কর্মীরা৷ তারপর আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে খোলা চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে ছাত্রদের কাছে কলেজ স্বাভাবিক করার অনুরোধ করা হয়৷ যদিও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না অধ্যক্ষ অমিতাভ রায়৷ পরে তিনি জানান, অচলাবস্থা চলায় সিলেবাস শেষ করা কঠিন হয়ে পড়বে। সমস্যা হবে পড়ুয়াদের মার্কশিট তৈরি বা পাশ করে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সার্টিফিকেট দিতেও।
অধ্যক্ষ জানান, অর্থবর্ষ শেষদিকে প্রচুর কাজ বাকি৷ সেসব হচ্ছে না। অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনের ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে বলে তাঁর আশঙ্কা। কোনও কাজ না হওয়ায় ইলেকট্রনিক জার্নালের ২৮ লক্ষ টাকা ও কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের সাড়ে ২৭ লক্ষ টাকা ফেরত যাওয়ারও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
ওই খোলা চিঠি পাওয়ার পরে এ দিন আগে থেকে নির্দিষ্ট করা একটি মিছিল বাতিল করেছেন আন্দোলনকারীরা৷ তাঁদের কথায়, ‘‘এ দিনের ওই বৈঠকে কর্মীরা একাধিক প্রস্তাব দিয়েছেন। সেগুলো আমরা আলোচনা করে দেখছি৷’’ আন্দোলনরত ছাত্রদের এই বক্তব্যে কিছুটা হলেও আশা জেগেছে কলেজ কর্তৃপক্ষের মনে৷ যদিও আন্দোলনকারীরা এও জানাচ্ছেন, আপাতত অনশন চলবে৷
অন্য দিকে এ দিনই ডাক পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলেন র্যাগিংয়ে অভিযুক্ত ২৪জন ছাত্রর অভিভাবকরা। সোমবার দুই ছাত্রের অভিভাবকরা পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। পুলিশের তরফে তাঁদের ছেলেদের বিরুদ্ধে কি কি ধারায় মামলা হয়েছে তা জানিয়ে সতর্ক করা হয়।