এক বছর পর বোর্ড মিটিং ডাকল ইংরেজবাজার পুরসভা। —ফাইল চিত্র
বোর্ডের বৈঠক না হওয়ায় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থাও এনেছিলেন। রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে অবশ্য তা আর হতে পারেনি।
এমন পরিস্থিতিতে অবশেষে এক বছর পরে ‘বোর্ড মিটিং’ ডাকল ইংরেজবাজার পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, ২৪ ডিসেম্বর ওই বৈঠকের বিষয়ে কাউন্সিলরদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তা ঘিরে ফের সরগরম হতে পারে ইংরেজবাজার পুরসভা।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার পুরসভার ২৯ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। দলবদলের পরে ২৫ জন কাউন্সিলর এখন তৃণমূলের। বামেদের দুই এবং বিজেপির দু’জন কাউন্সিলর রয়েছেন।
বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর থাকলেও নিয়মিত বোর্ড মিটিং হয় না ইংরেজবাজার পুরসভা। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর পুরসভায় বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছিল। অভিযোগ, সেই সভায় পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েন প্রাক্তন পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। তার জেরে ভেস্তে যায় ওই বৈঠক। দু’বছর আগেও নীহার-কৃষ্ণেন্দুর বচসার জেরে পুরসভার বোর্ড মিটিং ভেস্তে গিয়েছিল।
পুর-আইন অনুযায়ী, প্রতি মাসে পুরসভায় বোর্ডের বৈঠক করার নিয়ম রয়েছে। ওই বৈঠকের পরেই পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজ করা যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, বোর্ড মিটিং না করেই পুরপ্রধান শহরে একের পর এক প্রকল্পের কাজ করে গিয়েছেন। আড়ালে ঘনিষ্ঠ মহলে সে কথা বলেন শাসকদলের কাউন্সিলেরাও।
এমন পরিস্থিতিতে ছ’মাস আগে নীহারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামে দলের রাজ্য নেতৃত্ব। নীহারকে নিয়ম মেনে বোর্ড মিটিং ডাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রে খবর, ২৪ ডিসেম্বরের বোর্ড মিটিংয়ের কথা সব কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বৈঠকে পুরসভার বাজেট নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের অনুমান, ওই বৈঠক ঘিরে ফের সরগরম হতে পারে পুরসভা। এত দিন বোর্ড মিটিং না হওয়ায় নীহারের বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে একাধিক বার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন দলের কাউন্সিলরেরা। এ বারের বৈঠকে অনেকে সেই ক্ষোভ উগড়ে দিতে পারেন।
প্রশ্ন উঠেছে, কেন বোর্ডের বৈঠক না করেই কাজ করছেন পুরপ্রধান। তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরদের একাংশের দাবি— কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গে নীহারের দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণেন্দুকে পরাজিত করেছিলেন নীহার। তাই ওই দু’জনের বিবাদের প্রভাব বোর্ড মিটিং-এও দেখা যায়।
কৃষ্ণেন্দু বলেন, ‘‘অনেক বছর আমিও পুরপ্রধান ছিলাম। প্রতি মাসেই বোর্ড মিটিং করতাম। কারণ তা না করে কোনও কাজ করা যায় না।’’ নীহার বলেন, ‘‘বিভিন্ন কারণে বোর্ড মিটিং করা যায়নি। এ বার বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’