আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে জলপাইগুড়ির রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিলে আনন্দচন্দ্র শিক্ষকশিক্ষণ কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি - সন্দীপ পাল।
জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের মেডিক্যালের জেলা সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মহিলা চিকিৎসকদের পোশাক বদলের ঘরের দরজায় কাচ লাগানো! দরজা ঠিক মতো বন্ধ করা যায় না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও যথেষ্টই ‘ঢিলেঢালা’ বলে দাবি চিকিৎসকদের। জেলা সদর হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসকদের জন্য শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে অসুবিধার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহিলা চিকিৎসক, নার্স ও মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা। আরজি কর কাণ্ডের পরে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্ক আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
জেলা সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগ চত্বরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রোগীদের পরিষেবা দিতে হয় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের। এই চত্বরে পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। নেই শৌচাগার। এক মহিলা চিকিৎসক বলেন, ‘‘খুব অসুবিধের মধ্যে কাজ করতে হয় আমাদের। কর্তৃপক্ষকে বার বার জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি।’’ জেলা সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মহিলা চিকিৎসক ও মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীদের পোশাক বদলের ঘরের অবস্থাও বেহাল বলে অভিযোগ উঠেছে। ইন্ডোরে মহিলা চিকিৎসকদের জন্য আলাদা শৌচাগার ও বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ঘরও নেই বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জেলা সদর হাসপাতাল ক্যাম্পাসে সীমানা প্রাচীর না থাকায়, অবাধে হাসপাতাল চত্বরে যখন তখন যাতায়াত করতে দেখা যায় বহিরাগতদের। রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই। প্রায় প্রতি রাতেই মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সিং স্টাফ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে রোগী ও তাঁদের বাড়ির লোকেদের ঝামলা বাধে। মদ্য পান করে হাসপাতালে ঢুকে গন্ডগোল করে অনেকে, অভিযোগ। নিরাপত্তা রক্ষীরা পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘পারেন না’ বলে দাবি। পুলিশ ফাঁড়ি না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
দুই হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বেআইনি ভাবে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ‘পার্কিং জ়োন’ না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে দাবি চিকিৎসকদের একাংশের। প্রায় চার কিলোমিটার দূরত্বে দুই হাসপাতালের পরিষেবা চালাতে যথেষ্টই বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এক ছাদের নীচে সব ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলা হলেও, কার্যত এখনও তা করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
এই বিষয নিয়ে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব বলেন, ‘‘আরজি করের ঘটনার পরে নির্দেশ মেনে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।’’