নির্বাচনের কাজে যুক্ত এমসিসি(মডেল কোড অব কন্ডাক্ট) সেলের কর্তব্যরত সরকারী অফিসার ও কর্মীদের কাজে বাধা দিয়ে পর পর হুমকি ও ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠলো তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা অভিযুক্ত ওই তৃণমূল নেতা হলেন অমলেন্দু সরকার। তিনি আবার গঙ্গারামপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন রায়ের নির্বাচনী এজেন্ট। শনিবার রাতে অমলেন্দু সরকারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও বিশ্বজিৎ সরকার।
হুমকির জেরে ব্লকের এমসিসি কর্মীরা এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন যে, রবিবার তাঁরা কাজে বের হতে সাহস করেননি। বিডিও বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ভয়ে কর্মীরা কাজে বের হতে সাহস পাচ্ছেন না। গত শুক্র ও শনিবার গঙ্গারামপুরের দু’টি এলাকায় অবৈধ ভাবে টাঙানো হোর্ডিং খুলতে গিয়ে এমসিসি-র অফিসার ও কর্মীরা অমলেন্দুবাবুর রোষের মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। ১৭ তারিখের পরে তাঁদের দেখে নেওয়া হবে বলেও অমলেন্দুবাবু হুমকি দেন বলে অভিযোগ। থানায় অভিযোগ দায়ের করে বিডিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলেছেন। এলাকার বিদায়ী বিধায়ক তথা এবারের তৃণমূল প্রার্থী সত্যেন রায় বলেন, ‘‘কোথাও মনে হচ্ছে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। প্রবীণ অমলেন্দুবাবু আমার নির্বাচনী এজেন্ট এবং অভিজ্ঞ নেতা। বিষয়টি খোঁজ নেব।’’
তবে রবিবার সন্ধ্যে পর্যন্ত অমলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানি না। আইসি বলতে পারবেন।’’ গঙ্গারামপুর থানার আইসি সমীর দেওসা ফোন ধরেননি। যদিও বিডিও ওই অভিযোগের কপি মহকুমা পুলিশ আধিকারিককেও পাঠিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সরকারী কর্মীদের কাজে বাধা, ভয় দেখানো ও হুমকির অভিযোগে আইনগত যে ধারার ব্যবস্থা রয়েছে, পুলিশকে তাই নিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী খোঁজ নিচ্ছেন।
অন্য দিকে পুরো অভিযোগ বেমালুম অস্বীকার করেছেন অমলেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শনিবার ওই কর্মীরা ২ নম্বর ওয়ার্ডে কালীতলা এলাকায় আমাদের একটি হোর্ডিংয়ের কাছে যান। তাঁদের জানাই যে, হোর্ডিংয়ের অনুমতি নেওয়া আছে। এবং বিডিও অফিসে বাড়ির মালিকের অনুমতিপত্র জমা দেওয়া হবে জানিয়ে বলেছি, খুঁচিয়ে ঘা করছেন কেন? কেউ কি অভিযোগ করেছে? এইটুকুই শুধু বলা হয়েছে।’’ অমলেন্দুবাবুর দাবি, হুমকি ও ভয় দেখানো হয়নি। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গঙ্গারামপুরের কানাই-বলাই মোড়ে নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করে তৃণমূলের হোর্ডিং খুলতে গিয়ে এমসিসি-র ভারপ্রাপ্ত অফিসার ও কর্মীরা তুমুল ক্ষোভের মুখে পড়েন। তৃণমূল নেতা অমলেন্দুবাবু তাদের ধমক দিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ। পর দিন শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ব্লকপাড়া এলাকায় বিনা অনুমতিতে তৃণমূলের ভোটপ্রচার হোর্ডিং খুলতে গেলে অনুরূপ রোষের মুখে পড়েন কর্মীরা। এমনকি গঙ্গারামপুর ব্লক অফিসে গিয়ে অমলেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে ভোটের পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।