গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স অর্থাৎ পণ্য পরিষেবা কর ব্যাপারটা ঠিক কি সেটা ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের অনেকেই বুঝতে পারছেন না। কেউ বলছেন, ‘জিএসটি’ যেন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার মাঝরাতে তা চালুর পরে শনিবার দিনভর উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকার বাজার সরগরম ছিল জিএসটি নিয়েই। তবে হাট-বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানিয়েছেন, আর পাঁচটা শনিবারের তুলনায় এ দিন কেনাবেচা কম হয়েছে। বিশেষত শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের বহু দোকানে বিক্রি কম হয়েছে।
প্রায় সব ক্ষেত্রেই খুচরো ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ডিস্ট্রিবিউটররা জিএসটি নম্বর নিয়ে সরবরাহ স্বাভাবিক করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে জন্য অনেক পণ্যই সরবরাহ আপাতত বন্ধ রেখেছেন একাধিক ডিস্ট্রিবিউটর। শিলিগুড়ির বিধান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সহ সভাপতি অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘জিএসটি চালুর প্রায় দেড় সপ্তাহ আগে থেকে অনেক ডিস্ট্রিবিউটর পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। জিএসটি নম্বর নিয়ে ফের স্বাভাবিক সরবরাহ করবেন বলে মনে হচ্ছে।’’ ফলে, দোকানে বিক্রি কমে গিয়েছে।
কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের ছোট ও মাঝারি দোকানদারদের একাংশও কেনাবেচা কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন। প্রবীণ ব্যবসায়ী সুবল হালদার বলেন, ‘‘বর্ষাকালে আমাদের বিক্রি কিছুটা কমে ঠিকই। এ বার যেন বেশিই কমেছে। জিএসটি ব্যাপারটা অনেকের মাথার উপর দিয়ে যাওয়ায় অনেকে কটা দিন অপেক্ষা করছেন।’’
বস্তুত, ‘এক দেশ-এক কর’ নীতি নিয়ে বিভ্রান্তিও ছড়াচ্ছে। যেমন, রায়গঞ্জের মোহনবাটি বাজারে কিংবা শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে দুজন ব্যবসায়ীর অভিজ্ঞতা একইরকম। একজন ক্রেতা মধু কিনতে গিয়ে তার থেকে বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে বলে হইচই জুড়েছিলেন। দু-জায়গায় বিক্রেতারা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, জিএসটি চালু হওয়া মাত্র তো আর আগের দামে কেনা মাল কম দামে বিক্রি করা যায় না। বিস্তর তর্কাতর্কির পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে উভয় জায়গায়।
রায়গঞ্জের মোহনবাটি বাজারের নামি কোম্পানির বিভিন্ন ভোজ্যতেল, মশলা, পাঁপড়, আচার-সহ বিভিন্ন শুকনো খাবারের প্রবীণ ডিস্ট্রিবিউটর জয়ন্ত সোমের দাবি, ‘‘জিএসটি চালু হওয়ার পর খুচরো বাজারে দৈনন্দিন পণ্যের দাম বাড়েনি। তবে এখন থেকে খুচরো ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছ থেকে মুদির সামগ্রী বা অন্য শুকনো খাবার কিনতে হলে তাঁদের প্যানকার্ড ও আঁধার নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক। এতে কোন ব্যবসায়ী কত টাকার ব্যবসা করছেন ও তাঁরা সেই হিসেবে ট্যাক্স দিচ্ছেন কি না, তা কেন্দ্র সরকারের পক্ষে জানা সম্ভব হবে।’’