জলমগ্ন: প্রাক্তন পুরপ্রধানের ঘরেও ঢুকল জল। নিজস্ব চিত্র
রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন হল আলিপুরদুয়ার শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বৃহস্পতিবার ভোররাত থেকে শহরের প্রায় সব ওয়ার্ডেই কমবেশি জল জমতে শুরু করে। কোথাও হাঁটুজল, তো কোথাও প্রায় কোমরসমান জল জমে যায় বলেও অভিযোগ। পাহাড়েও প্রচুর বৃষ্টির জেরে ফুলে ফেঁপে ওঠে নদী। যার জেরে ভোরে স্ল্যুইস গেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরের বেশ কিছু এলাকার পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। জলবন্দি বাসিন্দাদের উদ্ধারের জন্য তিনটি ওয়ার্ডে নৌকাও নামাতে হয়। দুপুরের পর থেকে নদীর জল কমতে শুরু করায় খানিকটা হলেও স্বস্তির শ্বাস ফেলেন প্রশাসনের কর্তারা।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, শুধুমাত্র বুধবার রাতে আলিপুরদুয়ার শহরে ৩০৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা এই মরসুমে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টি। এ ছাড়াও হাসিমারায় ১২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। রাত থেকেই পাহাড়েও পাল্লা দিয়ে প্রবল বৃষ্টি শুরু হওয়ায় জেলার ছোট-বড় সব নদীর জলই বাড়তে শুরু করে। ভোররাতের দিকে ফুলেফেঁপে ওঠে আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া কালজানি নদী ও ছোট নদীগুলি। ফলে বিপদসীমার উপর কখন নদীর জল উঠবে সেই অপেক্ষা না করে তখনই শহরের স্ল্যইস গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রবল বৃষ্টিতে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সকালে কালজানির জল বিপদসীমা অতিক্রম করলে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়।
এরই মধ্যে শহরের একটি স্ল্যুইস গেট নির্দিষ্ট সময়ে বন্ধ না করায় সেখান দিয়ে ঢুকে পড়া নদীর জলে ৮ নম্বর ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। যার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাধারণ মানুষ। ক্ষোভ সামাল দিতে দু’টি পাম্পের সাহায্যে এলাকার জল বের করার চেষ্টা করেন পুরকর্মীরা। কিন্তু তার মধ্যেই একটি পাম্প বিকল হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ আরও বাড়ে। পুরসভা সূত্রের খবর, ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়াও ৫ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ দিন নৌকা নামাতে হয়। নিউটাউন এলাকায় প্রাক্তন পুরপ্রধান আশিস দত্তের ঘরেও জল ঢুকে যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার ঘরেও যে জল ঢুকবে, ভাবিনি।’’
পুরসভার প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক রাজেশ বলেন, ‘‘রাতভর প্রবল বৃষ্টির জেরেই কিছু জায়গায় জল জমেছিল। দ্রুত জল নেমে যায়।’’ সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার প্রিয়ম গোস্বামী জানান, পৌনে ১টা নাগাদ কালজানি নদী থেকে হলুদ সঙ্কেত তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রবল বৃষ্টিতে এ দিন কুমারগ্রাম, কালচিনি, মাদারিহাটের কিছু এলাকাতেও জল জমে।