প্রতীকী ছবি।
প্রশাসক বসার পর থেকে শিলিগুড়ি মহকুমার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উন্নয়ন স্তব্ধ থাকার অভিযোগ উঠেছিল। এ বার জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কারের জন্য অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত অংশ নেয়নি বলেও অভিযোগ। ফলে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ কতটা হয়েছে, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই নিয়ে একটি পক্ষের যুক্তি, ভাল কাজ করলে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত। মহকুমা পরিষদ সূত্রে খবর, এ বছর জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কারের জন্য মহকুমার ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত অংশ নিয়েছে। বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি কেন অংশগ্রহণ করল না, সে নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
মহকুমার তৃণমূল নেতা কাজল ঘোষ জানান, সরকার দুয়ারে গিয়ে মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের সমস্ত অভাব, অভিযোগ তারা সমাধান করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় পুরস্কারে জন্য অংশগ্রহণ না করলেও সরকারি কর্মীরা গুরুত্ব দিয়েই কাজ করছেন।’’ মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বছর দীনদয়াল উপাধ্যায় সশক্তিকরণ পুরস্কার পেয়েছিল মাটিগাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েত। সে জন্য তারা আর্থিক অনুদানও পেয়েছে। জেলাস্তরের মূল্যায়ন কমিটি এ বছরও এই গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম রাজ্যে পাঠিয়েছে। মহকুমা পরিষদ সূত্রে খবর, মাটিগাড়া-১ পঞ্চায়েতে একশো দিনের কাজ, রাস্তাঘাট, নিকাশি থেকে গ্রামের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ভাল হয়েছে। এ বছর তারা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে মা এবং শিশুদের জন্য আলাদা ঘর তৈরি করেছে এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের পরিকল্পনা নিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত উন্নয়ন পরিকল্পনা পুরস্কারের জন্য বিধাননগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম পাঠানো হয়েছে।
গত বছর ২২টি গ্রাম পঞ্চায়েতই জাতীয় পঞ্চায়েত পুরস্কারের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছিল। এ বার মাত্র সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েত কেন অংশগ্রহণ করল? বাকিগুলিতে কি বিভিন্ন প্রকল্পে উন্নয়নের কাজ কম হয়েছে? এ ব্যাপারে মহকুমা পরিষদের এক আধিকারিক জানান, প্রশাসক বসার পর থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির উন্নয়নের কাজ কোথায়, কী ভাবে হবে, তা কর্মীদের অনেকে ঠিক করতে পারছেন না। প্রশাসক বসার দেড় মাসও হয়নি। তার আগে করোনা পরিস্থিতির কারণেও কাজের গতি কম ছিল বলে দাবি। কাজ ততটা ভাল না হওয়ায় অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত অংশগ্রহণ করতে চায়নি বলে দাবি।
এ ব্যাপারে বিরোধীদের অভিযোগ, মহকুমায় কাজের খতিয়ান তলানিতে ঠেকেছে। তা ঢাকতেই বিভিন্ন যুক্তি দিচ্ছে প্রশাসনের সঙ্গে মহকুমা পরিষদের কর্মীদের একাংশ। মহকুমা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তাপস সরকার বলেন, ‘‘প্রশাসক বসার আগে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে জোরদার কাজ হয়েছে। কিন্তু এখন এক রকম অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি। ফলে শুধু পুরস্কারের জন্য অংশগ্রহণ নয় পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক সাধারণ মানুষ।’’ অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান।