রায়গঞ্জে গাছ লাগাচ্ছেন রথীনবাবু। — নিজস্ব চিত্র
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে মোটরবাইক নিয়ে ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েছেন কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা রথীন দাস। মঙ্গলবার দুপুরে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় এসে পৌঁছান তিনি। বছর ৪১ এর রথীনবাবু সোমবার দুপুরে কলকাতার অরন্যভবন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেন। এ দিন কর্ণজোড়ায় উত্তর দিনাজপুর পিপল ফর অ্যানিম্যালসের সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনের সদস্যরা তাঁকে সংবর্ধনা জানান। এরপর সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। এলাকার বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের বন্যপ্রাণ ও জঙ্গল সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতন করেন।
রথীনবাবুর জানান, বন্যপ্রাণ ও জঙ্গল সংরক্ষণ না হলে ভবিষ্যতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে না। দূষণ রুখতে বৃক্ষরোপনও জরুরি। একজন পরিবেশপ্রেমী হিসেবে এই বার্তা দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই তিনি বাইকে চেপে ৭৫ দিনের ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছেন।
কলকাতার বানতলা এলাকায় জৈবসার তৈরির একটি কারখানা রয়েছে রথীনবাবুর। এ দিন বিকালে শিলিগুড়ি হয়ে অসমের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, দেশের প্রতিটি রাজ্যের রাজধানী ঘুরে তিনি কলকাতায় ফিরবেন। ভ্রমণ চলাকালীন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বন দফতর তাঁকে বিভিন্ন রেঞ্জ অফিসে থাকার অনুমতি দিয়েছে। প্রয়োজনে তিনি হোটেল ও ধাবায় রাত কাটাবেন। দরকারে খোলা আকাশের নিচে তাঁবু খাটিয়ে রাত কাটাতেও প্রস্তুত তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের পশু ও পরিবেশপ্রেমী সংগঠন, বন দফতর, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় গোটা দেশে তিনি পড়ুয়া ও বাসিন্দাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে বন্যপ্রাণী ও জঙ্গল সংরক্ষণ কতটা জরুরি ও পরিবেশের দূষণ রুখতে বৃক্ষরোপনের গুরুত্ব কতটা, সেই বিষয়ে সচেতন করবেন। এছাড়াও ভ্রমণ চলাকালীন তিনি এককভাবেও বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের একত্রিত করে ও বিভিন্ন পঞ্চায়েত কার্যালয়ে পৌঁছে বাসিন্দাদের সচেতন করার চেষ্টা করবেন বলেও দাবি করেছেন। ১৯৯৫ সালে কলকাতার গুরুদাস কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক হন তিনি। বাড়িতে বাবা, মা ও ভাই রয়েছে রথীনবাবুর। এখনও বিয়ে করেননি তিনি।
রথীনবাবু বলেন, ‘‘সাত বছর আগে বানতলা এলাকার একটি হাটে কচ্ছপ কেটে মাংস বিক্রি করতে দেখে খুব কষ্ট হয়েছিল। তখন থেকেই কোথাও গাছ কাটতে দেখলেও প্রতিবাদ করতাম। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে দেশবাসীর মধ্যে বন্যপ্রাণ ও জঙ্গল সংরক্ষণ এবং বৃক্ষরোপনের বার্তা ছড়িয়ে দিতে একদিন ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ব। এতদিনে সেই স্বপ্ন পূরণ হল।’’