ধরপাকড়: বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ইসলাপুরের উকিলপাড়ায়। ছবি: অভিজিৎ পাল
মন্ত্রীর বাড়ির সামনে আন্দোলনে দ্বিতীয় দিনে গ্রেফতার হলেন টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীরা। সোমবার বিকেলে ইসলামপুরের উকিলপাড়ার শ্রম দফতরেররের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানির ভাড়া বাড়ির সামনে অবস্থানরত যুবকদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আন্দোলনকারীদের দাবি, চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। জেলে গিয়ে আমরণ অনশনে বসবেন বলে দাবি তাঁদের। বিরোধীরা অবশ্য দাবি করছে, নিয়োগ নিয়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
রবিবার থেকে রব্বানির ভাড়া বাড়ির সামনে অবস্থানে বসেন মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের উর্দু ভাষায় টেট উত্তীর্ণ যুবক-যুবতীরা। তাঁদের দাবি, ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি পাননি। ২০১৬ সালে হাইকোর্টে মামলা করলে তাঁদের পক্ষে রায় হয়। আসন সংখ্যাও বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে মহকুমাশাসক দফতরের সামনে আন্দোলনে বসেছিলেন তাঁরা। বারবার সময় দেওয়া হলেও নিয়োগ হচ্ছে না বলে দাবি করে রবিবার মন্ত্রীর ঘরের সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা।
তাঁদের দাবি, রবিবার মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কিছু ক্ষণের জন্য দেখা করলেও পরে আর আসেননি। সোমবার দুপুরে অবশ্য তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ অনেকেই। তাঁদের মধ্যে ছিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রাইমারি বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জাহিদ আলম আরজুও। মৌখিক ভাবে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু পাকাপাকি আশ্বাস না পেয়ে অবস্থান থেকে উঠতে চাননি আন্দোলনকারীরা। অবশেষে এ দিন বিকেলে বিশাল সংখ্যক পুলিশ নিয়ে আইসি শমীক চট্টোপাধ্যায় পৌঁছন। ১৫১ ধারায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। টেট আন্দোলনকারীদের পক্ষে ইজাজ হোসেন বলেন, ‘‘গ্রেফতার করে আমাদের সরাতে পারবে না। আমরা প্রয়োজনে জেলে গিয়ে অনশনে বসব।’’
চাকুলিয়ার বিধায়ক আলি ইমরান রামজ বলেন, ‘‘হাইকোর্টে মামলা জেতার পরও ওঁদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছিল চাকরির নামে। ওঁরা যাতে তা নিয়ে মুখ না খোলেন সে কারণে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। আমি ছাত্রদের পাশে রয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখব যাতে ওঁদের চাকরির ব্যবস্থা হয়।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘পুলিশ প্রশাসনের উচিত ছিল ওঁদের গ্রেফতার না করে কাটমানিতে জড়িত মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা।’’ যদিও রব্বানি বলেন, ‘‘ওঁদের দাবি ন্যায্য। তবে সব কিছু করতে একটু সময় লাগে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কারও বাড়ি ঘেরাও করা বেআইনি। ওটা আমারও বাড়ি নয়, ভাড়া থাকি। ওঁরা চাইলেই কোনও দফতরের সামনে ধর্নায় বসতে পারতেন।’’ তবে কাটমানি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মামলায় রায় পাওয়ার পরে কেউ কাটমানি দিতে যাবে কেন! বিরোধীরা মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’