ধৃত: আকিলুর রহমান। নিজস্ব চিত্র
মানিকচকে তরুণী খুনের অভিযোগের ঘটনায় স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মানিকচকের একটি গোপন আস্তানা থেকে শনিবার গভীর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতের নাম আকিলুর রহমান। তাঁর বাড়ি মানিকচকের করিয়া সুলতানপুর এলাকায়। আকিলুর নিজেকে আকুপাংচারের চিকিৎসক বলে পরিচয় দিতেন। নিহত তরুণীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার মালদহ জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতকে পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
শনিবার সকালে মানিকচকের কামালপুরের একটি আমবাগান থেকে ওই তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তদন্তে নামে মানিকচক থানার পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে নিহতের পরিচয়। পুলিশ জানায়, তাঁর নাম রেশমি বেগম (১৯)। বিহারের কিসানগঞ্জ এলাকায় বাড়ি। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ তরুণীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তরুণীর বাবা জামাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে মানিকচক থানার পুলিশ শনিবার গভীর রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
নিহত তরুণীর বাবা শেখ মোশারফ বলেন, ‘‘প্রায় ছ’মাস আগে কিসানগঞ্জ এলাকার একটি ইটভাটায় কাজ করত আকিলুর। সেখানেই আমার মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তার পরেই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় আকিলুর। তিন মাস পরে ফিরে এলে ওদের বিয়ে দেওয়া হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে দেড় লক্ষ টাকার জন্য মেয়েকে চাপ দিচ্ছিল জামাই। তা না দিলে মেয়েকে তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। মোশারফের অভিযোগ, টাকা দেওয়ার জন্য কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। টাকা না পেয়ে তাঁর মেয়ের উপরে অত্যাচার করতেন আকিলুর। তাঁর নালিশ, টাকা না পেয়েই মেয়েকে মেরে আমবাগানে ফেলে দেওয়া হয়। আকিলুরের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মোশারফ।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, ওই তরুণীর সঙ্গে অন্য কারও বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ঘন ঘন তাঁর মোবাইলে ফোনও আসত। সে জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হত। পুলিশ জানায়, ওই তরুণীর কী ভাবে মৃত্যু হল তা তাঁর স্বামীকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ধৃতকে এ দিন আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধৃতকে জেরা করে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।’’