অপলকে: মঞ্চে তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথা শুনতে ভিড় মহিলাদের। কালিয়াগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
‘‘হাসপাতালের ন’তলায় প্রসূতি বিভাগ রয়েছে কেন?’’— উত্তর দিনাজপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে জানতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ওই বৈঠকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে এমনই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক তাঁকে জানান, এক তলার একটি ঘরে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। তা শুনে দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ মমতা এসপি সুমিত কুমারের কাছে তার জবাব চান। দ্রুত পুলিশকর্মীদের অন্য জায়গায় সরিয়ে হাসপাতালের এক তলায় প্রসূতি বিভাগের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন মমতা।
এসপি-র পাশাপাশি ডিএম অরবিন্দকুমার মিনাকে ধমক দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে। প্রসূতি বিভাগ অত উপরে থাকবে কেন? ওটাকে নীচে আনতে হবে।’’ প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবারের মধ্যে সেই কাজ শুরু করে, ৭ দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। তিন দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট তাঁকে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। (জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ নিয়ে ভুল তথ্য গিয়েছে। বাস্তবে ওই হাসপাতালের আট তলায় রয়েছে প্রসূতি বিভাগ। ন’তলায় লেবার রুম ও অপারেশন থিয়েটার)।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ‘দালালচক্র’ সক্রিয় রয়েছে বলেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি প্রসূতিদের স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে তাঁদের পরিজনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এমন কেউ ধরা পড়লে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে হবে।’’ দালালচক্র রুখতে হাসপাতালে সিআইডি কর্মী বা নোডাল অফিসার নিয়োগের কথাও বলেন তিনি।
এক মাস আগে নিযুক্ত ওই হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন অমল আচার্যকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এ সব হচ্ছে তা জানো? কারা করছে এ সব?’’ একইসঙ্গে তাঁকে মমতার প্রশ্ন, ‘‘তুমি কি পুরো সময় হাসপাতালে দিতে পারছ? না পারলে ডিএমকে চেয়ারপার্সন করে দিচ্ছি।’’ অমল তাঁকে জানান, তিনি হাসপাতালে পুরো সময় দেবেন।
এ দিনের বৈঠকে ওই প্রসঙ্গ নিয়ে বিরোধী শিবিরের কটাক্ষ, এমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি না হওয়ায় জেলাবাসী উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না। এ দিন তা ফের স্পষ্ট হয়েছে।
সে কথা উড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ বলেন, ‘‘রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এখানে এমসের ধাঁচে হাসপাতালের প্রয়োজন নেই। কারণ রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। ইসলামপুরে রয়েছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। বিনা খরচে জেলার মানুষ সব রকম চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন।’’