Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: পাহাড়ে হাঁটলেন মমতা, কথা বললেন সোয়েটার নিয়ে

পাহাড়ি খাদের ধার ঘেঁষে ছোট্ট ঝুপড়ি চায়ের দোকানে বসলেন আয়েশ করে। পাশে বসে গাইছেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তাল মেলালেন তিনি নিজেও।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২১ ০৭:১৯
Share:

স্বাস্থ্যচর্চা: বুধবার কার্শিয়াঙের রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: স্বরূপ সরকার।

কুয়াশা ঢাকা পাকদণ্ডী। তার মধ্যেই তিনি হাঁটতে বার হয়েছেন। মাঝে কোনও জুতোর দোকানে দাঁড়িয়ে চটি কিনলেন। কোথাও সোয়েটারের দোকানে দাঁড়িয়ে দোকানি মহিলাকে বোঝালেন বাজার ধরার সুলুকসন্ধান। তার পরে পাহাড়ি খাদের ধার ঘেঁষে ছোট্ট ঝুপড়ি চায়ের দোকানে বসলেন আয়েশ করে। পাশে বসে গাইছেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তাল মেলালেন তিনি নিজেও। তাঁকে কাছ থেকে চেনেন, এমন এক সঙ্গী বলছিলেন, ‘‘এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ। মাঝে কিছু দিন বন্ধ ছিল। এ বারে উনি স্বমহিমায় ফিরেছেন।’’

Advertisement

২০১৭ সালে এমনই এক প্রাতর্ভ্রমণের সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে চলে গিয়েছিল বিমল গুরুংয়ের কনভয়। দুই শিবিরে তখন সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। তৃণমূল সদ্য মিরিক পুরসভা জিতেছে। গুরুং তার পরেই আন্দোলন শুরু করেছেন পাহাড়ের স্কুলে বাংলা চালু করার বিরুদ্ধে। যা শেষ পর্যন্ত ফের আলাদা রাজ্যের দাবি এবং রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে বদলে যায়। এর পরে পাহাড় শান্ত হলেও এই ভাবে লম্বা পথ হেঁটে বেড়াতে দেখা যায়নি মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁর সঙ্গীরা বলছেন, এখন গুরুংরা অনেকটাই ঠান্ডা। অনীত থাপাও পাহাড়ে তৃণমূলের সঙ্গী হিসেবে জনমত গঠনে কাজ করছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী তুলনায় অনেকটা হাল্কা মেজাজে। তার মধ্যেই তিনি জিটিএ ভোটের প্রক্রিয়াও চালু করে দিলেন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজনীতি থেকে কোভিড পরিস্থিতি, সব স্বাভাবিক থাকলে নতুন বছরের গোড়াতেই জিটিএ নির্বাচন হতে পারে। সরকারি সূত্রের খবর, ৫ জানুয়ারি নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে বলে ঠিক হয়েছে। তার পরেই কোভিড পরিস্থিতি দেখে জিটিএ নির্বাচন ঘোষণা করা হতে পারে। মঙ্গলবার কার্শিয়াঙে প্রশাসনিক বৈঠকে অজিত বর্ধনকে সরিয়ে দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলমকে জিটিএ-র প্রধান সচিবের দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে জিটিএ নিয়ে সরকারি ছাড়াও বিভিন্ন স্তরে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। খোদ মুখ্যসচিবকে আলাদা করে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।

Advertisement

মনে করা হচ্ছে, পাহাড় নিয়ে কেন্দ্র যে আলোচনা শুরু করেছে, জিটিএ নির্বাচন হয়ে গেলে সেখানে রাজ্যের সঙ্গে তাদের প্রতিনিধিরাও যোগ দিতে পারবেন। ফলে রাজ্যের জোর বাড়বে। পাশাপাশি, পাহাড়েও নির্বাচিত প্রশাসন বসবে। এই নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘উনি জিটিএ নির্বাচনের কথা বলছেন, যাতে ওঁর সহযোগীরা নতুন করে দুর্নীতি করতে পারে। জিটিএ-তে কেন্দ্রও ছ’শো কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু ওখানে অসীম দুর্নীতি হয়েছে।’’

তবে মমতার এ দিনের প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ হাঁটায় (কালিম্পং সার্কিট হাউস থেকে মহানদী এবং ফেরা) কার্শিয়াঙের দোকানিরা খুশি। এখানেই দোকান হিরা প্রধানের। তিনি বলেন, ‘‘উনি কত দূর থেকে পাহাড়ে আসেন। আমাদের বাজারে এসে কেনাকেটা করবেন, এটা তো ভাবিইনি। হালকা সোয়েটার তৈরির কথাও বলেছেন।’’ মহানদী এলাকার রোশন রাই, সবিতা তামাংরা বলেন, ‘‘পাহাড় শান্ত হয়েছে। অনেকটাই বদল হয়েছে পরিস্থিতি।’’

তাতেই ফের জিটিএ ভোট করার কথা ভাবতে শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement