গত বিধানসভা ভোটের প্রায় এক বছর বাদে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সময়ের মধ্যে জেলার রাজনৈতিক পট অনেকটা বদলেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে জেলার ৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩টি চলে গিয়েছে বিরোধী বাম ও কংগ্রেসে। বিজেপি হাওয়া বাড়ছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলকে ঘুরে দাঁড়াতে উন্নয়নকে হাতিয়ার করে এগোনোর লক্ষ নিয়ে চলার পাশাপাশি জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে ফের বিপ্লব মিত্রকে ফিরিয়ে এনে দলে ঐক্য রক্ষার বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ জেলায় দলীয় নেতাদের কোন্দল এখনও যে পুরোপুরি মেটেনি তা দলের অনেকেই একান্তে মানেন।
নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণেই এক সময় তৃণমূলের ঘাঁটি এই জেলায় আসন হাতছাড়া হচ্ছে বলে দলের নেতারাই একান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
হরিরামপুরও ব্যতিক্রম নয়। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের দু’দিন আগে গত রবিবার তপনের রামপুরে বঙ্গীয় সংখ্যালঘু সমিতির জেলা সম্মলন করে তৃণমূল নেতৃত্ব। ওই সভার উদ্বোধক ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা। প্রধান অতিথি প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী। বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়, মাহমুদা বেগম থেকে ম্লান হয়ে থাকা হরিরামপুরের নেতা সোনা পালেরও বিশিষ্ট অতিথির তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র, সাংসদ অর্পিতা ঘোষের নাম তালিকায় ছিল না।
প্রতিমন্ত্রী বাচ্চুবাবুর অবশ্য দাবি, বিপ্লববাবু এবং সাংসদ উপস্থিত থাকতে পারবেন না জানানোয় অনুষ্ঠান তালিকায় নাম দেওয়া হয়নি। তবে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে আগের দিন, শনিবার বার্তা পেয়ে ওই সম্মেলন বাতিল হয়ে যায়। বিপ্লববাবু অবশ্য বলেন, দল থেকে ওই সম্মেলন করার কোনও অনুমোদন ছিল না। ফলে সেখনে উপস্থিত থাকার প্রশ্নই ছিল না।
তার এক সপ্তাহ আগে গঙ্গারামপুরের অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে মালদহ থেকে ফিরে যান রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। সুব্রতবাবু হরিরামপুরের নেতা সোনা পালকে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে বিপ্লববাবুর হাত ধরে চলার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর প্রায় পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে দু’জনের মধ্যে বনিবনা হতে এখনও দেখা যায়নি। তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনাও চলেছে অনেক।
এক জেলা নেতার কথায়, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব খবর রাখেন। তিনিই শেষ ভরসা। আজ, বুধবার তিনি জেলা নেতৃত্বকে কী ইঙ্গিতে দেন—কর্মীদের চোখ থাকবে সেদিকেই।