—ফাইল চিত্র।
দুই জেলা মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভা শেষ পর্যন্ত হচ্ছে জলপাইগুড়ি শহরে। চা বলয়ের পরিবর্তে ১৫ ডিসেম্বর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জন্য শহরের এবিপিসি মাঠটিকেই বেছে নেওয়া হয়। এ খবর বুধবার সকালেই নবান্ন থেকে জেলা প্রশাসনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রথমে দুই জেলার তৃণমূল নেতৃত্বেরই প্রস্তাব ছিল, চা বলয়ের কোথাও সভা হোক। নাগরাটাকা এবং ডিমডিমা দু’টি জায়গা বেছে রেখেছিলেন দুই জেলা নেতৃত্ব। গত কয়েকদিন ধরেই এটা নিয়ে আলোচনা চলছিল। সূত্রের খবর, সেই প্রস্তাবে রাজি হননি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শেষে এ দিন সকালে নবান্ন থেকে বার্তা আসার পরেই জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী, জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপার এবিপিসি মাঠ পরিদর্শনে যান। সভাস্থলের পাশেই এসি কলেজের মাঠে তৈরি হচ্ছে অস্থায়ী হেলিপ্যাড। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী নামবেন বলে খবর।
কেন চা বলয় থেকে সভাস্থল শহরে চলে এল? জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, ”নাগরাকাটায় মুখ্যমন্ত্রী এর আগে সভা করেছেন। এ বার জলপাইগুড়ি শহরকে সভার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। শীর্ষস্তরেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।” পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার দুই জেলার বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে কর্মিসভা হবে।”
সভাস্থল বদলের পিছনে মূলত ভোটের অঙ্কই কাজ করছিল শীর্ষ নেতৃত্বের ভাবনায়। গত লোকসভায় চা বলয়ে ব্যাপক ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তারপর থেকে তৃণমূলের সংগঠন নড়বড়ে হয়েছে চা বলয়ে। বিজেপির একাধিক সংগঠন বাগানগুলিতে সক্রিয় হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে সভা করালে সেই ‘ক্ষতি’ অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব হবে বলে তৃণমূল নেতারা ভাবছিলেন। একই সঙ্গে, শহর এলাকাও দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে। কারণ, জলপাইগুড়ি শহরের সব ওয়ার্ডে গত লোকসভায় বিজেপিই ‘লিড’ পেয়েছিল। তার উপর উলেন রায়ের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে শহরে বিজেপি কম সময়ে বহু লোক জড়ো করে পরপর মিছিল করে বলে খবর। সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠনও সম্প্রতি শহরে ভালরকম জাঁকিয়ে বসেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে নবান্নে খবর পৌঁছেছে। এর সঙ্গে শহরে তৃণমূলের গোষ্ঠী রাজনীতির অস্বস্তি ঝেড়ে বিধানসভা ভোটের আগে শহরেও নজর দেওয়া নেতৃত্বের অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে।
সভাস্থল নিযে কটাক্ষ করে বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “দুই জেলার সভা হবে। সেই সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেও তৃণমূল আরও বড় কোনও মাঠ নিল না। ওদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে।”