আদালতের পথে সোনামণি। নিজস্ব চিত্র।
অবশেষে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন মালদহ ত্রাণ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হরিশ্চন্দ্রপুরের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামণি সাহা। মঙ্গলবার চাঁচল মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। বিজেপি-র কটাক্ষ, আদালতের তাড়া খেয়ে একের পর এক তৃণমূল নেতানেত্রীরা আত্মসমর্পণ করছেন।
২০১৭ সালের বন্যার ত্রাণ দুর্নীতিতে মূল অভিযুক্ত এই সোনামণি। আগে আদালতের নির্দেশে তাঁর বাড়িতে নোটিস ঝুলিয়ে এসেছিল পুলিশ। কিন্তু তৃণমূলের ওই নেত্রী অধরা ছিলেন। তাঁর বাড়ির আসবাবপত্র বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টে তিন তৃণমূল নেতার জামিনের আবেদন খারিজ হওয়ার পর পরই সমস্ত অভিযুক্তই প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন।
বৃহস্পতিবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেন তৃণমূলনেতা আফসার হোসেন। তার পর সোমবার থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রোশনারা খাতুন। সোমবার চাঁচল মহকুমা আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সোনামণি।
প্রসঙ্গত, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দুই দফায় মোট ১৩ কোটি টাকা অনুমোদন করে রাজ্য সরকার। অভিযোগ, এই টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছয়নি। স্থানীয় শাসকদলের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিদের পকেটে গিয়েছে ত্রাণের অধিকাংশ টাকা। এর মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়।
২০১৭ সালের বন্যায় সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৭০ হাজার এবং আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ৩,৩০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। শুধু মালদহ জেলায় মোট ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে বেশির ভাগ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে ক্ষমতাশালী তৃণমূল নেতা এবং বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ একাধিক জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সোনামণির আত্মসমর্পণের ঘটনায় বিজেপি-র কটাক্ষ, হাই কোর্ট আর সুপ্রিম কোর্টের তাড়া খেয়ে ওঁরা বাধ্য হয়েছেন আত্মসমর্পণ করতে। রাজ্যের শাসক দল এতদিন ওঁদের আড়াল করেছিল।