স্ত্রীর সঙ্গে নিজের বাড়িতে দানেশ আনসারি। —নিজস্ব চিত্র
লটারিতে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু সেই সুসংবাদ দিন আনা দিন খাওয়া মালদহের দিনমজুরের পরিবারে বয়ে এনেছে অন্য এক আতঙ্ক। সম্ভাব্য বিপদের ভয়ে ঘুম উড়েছে রতুয়া-২ ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রামের দিনমজুর দানেশ আনসারির। আপাতত আত্মগোপন করেছেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশেরও।
প্রতিদিন সকালে কাজের খোঁজে রতুয়া থেকে মালদহ শহরে যান। সারা দিনের হাড়ভাঙা খাটুনির রোজগারে দুই মেয়ে এক ছেলে আর স্ত্রী মিলিয়ে পাঁচ জনের পরিবারের জন্য রসদ নিয়ে টালির চালের বাড়িতে ফেরাটাই ছিল দানেশের রোজনামচা। তবে তিন সন্তানের পড়াশোনার খরচ, আর পরিবারে কিছুটা সুদিনের আশায় মাঝে মধ্যে কিনতেন লটারির টিকিট। সম্প্রতি অতিরিক্ত রোজগারের জন্য বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে হবিবপুর ব্লকের পাকুয়াহাটে রাজমিস্ত্রির জোগানদারের কাজ পেয়ে সেখানেই থাকতেন দানেশ। সেখান থেকেই কেটেছিলেন ৩০ টাকার টিকিট। আর তাতেই খুলে গিয়েছে কপাল। তাঁর টিকিটের নম্বরই জিতেছে ১ কোটি টাকার পুরস্কার।
দানেশ জানান, ২৬ নভেম্বর মর্নিং লটারির টিকিট কাটেন তিনি। শুক্রবার হবিবপুর থেকে রতুয়ায় বাড়িতে ফেরেন। নিজে জানতেনও না লটারিতে কোটি টাকা পাওয়ার কথা। শনিবার এক সহকর্মী খবর দেন। আর তার পর থেকেই অজানা বিপদের আতঙ্ক চেপে বসেছে দানেশের মনে। তাই ওই দিন সপরিবার চলে যান এক আত্মীয়ের বাড়িতে। তাঁদের পরামর্শে পরের দিনই দ্বারস্থ হয়েছেন পুকুরিয়া থানার পুলিশের।
আরও পড়ুন: ভয়ে আমার নাম বলে না বিজেপি, ভাইপো বলে ডাকে, তোপ অভিষেকের
দানেশ বলেন, ‘‘এত টাকা পেয়ে যেমন আনন্দ হচ্ছে। তেমন আতঙ্কেও আছি। অনেক দুষ্ট চক্র এই টাকার জন্য আমাদের ক্ষতি করতে পারে। তাই পুলিশের সাহায্য চেয়েছি।’’ কিন্তু এত টাকা নিয়ে কী করবেন? দানেশের বক্তব্য, ‘‘তিন ছেলেমেয়েরই পড়াশোনার জেদ বরাবর। কিন্তু অভাবের সংসারে ওদের স্বপ্ন প্রায় ভুলতে বসেছিলাম। এ বার ওদের উচ্চশিক্ষিত করব।’’
আরও পড়ুন: মহিষাদলে নীল-সাদা মঞ্চেই শুভেন্দু, চুপ রইলেন দলীয় প্রসঙ্গে
কোটিপতি হয়ে পাল্টাবে কি দিনলিপি? দানেশের জবাব, ‘‘আমি খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুরির কাজ ছাড়ব না।’’