উত্তরে পর্যটনের তিন কাহন

গৌড়-আদিনার হাল ফেরাতে নয়া প্রস্তাব

পর্যটনকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য পর্যটন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠাল মালদহ জেলা প্রশাসন। একটি কনলাসটেন্সি ফার্মকে দিয়ে ডিটেইলড প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৩
Share:

পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ আদিনা মসজিদ। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

পর্যটনকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্য পর্যটন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠাল মালদহ জেলা প্রশাসন। একটি কনলাসটেন্সি ফার্মকে দিয়ে ডিটেইলড প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাতে পর্যটনকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ১৬ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। মূলত, গৌড়, পাণ্ডুয়া, আদিনার মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের টানতেই এই উদ্যোগ। ইতিমধ্যে পর্যটন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানি জেলার এই সমস্ত পর্যটনকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোগত অবস্থান সরোজমিনে দেখেও গিয়েছেন। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতর অর্থ অনুমোদন করলেই পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করা হবে।

Advertisement

ওই প্রস্তাবে প্রথমেই রয়েছে, গৌড়ের রামকেলি জিউ ও মহাপ্রভু চৈতন্য চরণ মন্দির সংস্কার, রূপসাগরে বোটিং, অতিথি আবাসের সংস্কার, একটি ওপেন এয়ার থিয়েটার ও মন্দিরে ঢোকার মূল গেটের। এ ছাড়া একটি ক্যাফেটেরিয়া, রাস্তা, পানীয় জল ও আলোর কথাও তোলা হয়েছে। এ সব কাজের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা।

এর পর রয়েছে বারদুয়ারি বা বড়সোনা মসজিদ এলাকার রাস্তা, পার্কিং ও পর্যটকদের বসার ব্যবস্থা এবং আলোকি করা। একই ভাবে পাশের দাখিল দরওয়াজা বা সেলামি দরওয়াজা এলাকার রাস্তা, পার্কিং, আলো, নিকাশির ব্যবস্থা করতে হবে। সুলতান সইফুদ্দিন ফিরোজ শাহের তৈরি করা ফিরোজ মিনারের সামনের নদীর পাড়ের সৌন্দর্যায়ন, নদীতে বোটিং ও আলোর ব্যবস্থা করার কথাও প্রস্তাবে বলা হয়। কদম রসুল মসজিদ, লুকোচুরি গেট, গুমটি দরওয়াজা ও চিকা মসজিদ চত্বরে ফুড স্টল, পার্কিং, রাস্তা ও আলোর ব্যবস্থাও প্রস্তাবে রয়েছে।

Advertisement

এ ছাড়া রয়েছে গৌড়ের কোতোয়ালি দরওয়াজার সংস্কার ও সেখানে যাওয়ার রাস্তা চওড়া করা, পার্কিং ব্যবস্থা। এ জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। এর পর পাণ্ডুয়ার কুতুবশাহী মসজিদ ও একলাখি মসজিদ সংলগ্ন পুকুরে বাঁধ ও পারাপারে সেতু এবং আলোর ব্যবস্থার কথা রয়েছে। ১৩৭৩ সালে সুলতান সিকান্দর শাহের আমলে তৈরি আদিনা মসজিদের সামনে একটি গেট, একটি ওপেন এয়ার থিয়েটার, রাস্তা ও আলোর ব্যবস্থাও প্রস্তাবে রয়েছে। শেষে রয়েছে, আদিনা ডিয়ার পার্কের জলাভূমি, অতিথি আবাসের সংস্কার, সেখানকার পিকনিক স্পটের উন্নয়ন, শিশুদের জন্য খেলার জায়গা করা, রাস্তা ও আলোর ব্যবস্থা এবং খাবারের স্টল তৈরির প্রস্তাব।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিকাঠামোগুলির উন্নয়নে রাজ্য পর্যটন দফতরের কাছে প্রায় ১৫ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকা চেয়ে জেলা প্রশাসন প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মালদহের জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘মালদহ জেলার গৌড়, পাণ্ডুয়া ও আদিনায় থাকা পর্যটিকেন্দ্রগুলিতে ঘুরতে এসে পর্যটকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে কারণেই সেগুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি। তাই পর্যটন দফতরের কাছে একটি পরিকল্পনা প্রস্তাবাকারে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মঞ্জুর হলেই কাজ শুরু হবে। দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘আমি কিছু দিন আগেই ওই পর্যটনকেন্দ্রগুলি ঘুরে এসেছি। সেখানে পরিকাঠামোগত বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। প্রস্তাব নিয়ে মন্ত্রী গৌতম দেব ও দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement