বাগান ভরেছে আমে। নিজস্ব চিত্র
কখনও মেঘলা, কখনও ঝিরঝিরে বৃষ্টি চলছে মালদহে। মেঘ, বৃষ্টি আবহাওয়া এখন অনুকূল আমের জন্য, দাবি উদ্যান পালন দফতরের। তাঁদের দাবি, বৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টি বা ঝড় না হলে এ বার জেলায় ‘রেকর্ড’ পরিমাণে আমের উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে মালদহে। তাই, এ বার মরসুমের শুরু থেকেই জেলার আম বিদেশে পাঠাতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। উদ্যান পালন দফতরের অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, “স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ৭৫ প্রজাতির আম বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” ফলে, মুখে হাসি ফুটেছে জেলার আম চাষিদের।
উদ্যান পালন দফতরের দাবি, মালদহে প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। এক দশক ধরে এখন জেলায় গড়ে আড়াই থেকে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। এ বার জেলায় সাড়ে তিন থেকে পৌনে চার লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই মুকুল আসতে শুরু করে আম গাছগুলিতে। এ বার প্রায় ৯৫ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। মুকুল এখন মটর দানায় পরিণত হয়েছে। এমন সময় চাষিদের গাছে জল স্প্রে করতে হয়।
শুক্রবার থেকে জেলায় দফায় দফায় ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। চাষিদের জল স্প্রে করার প্রয়োজন হবে না, দাবি উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের। সামন্ত লায়েক বলেন, “বৃষ্টির জন্য চাষিদের নতুন করে আর জল স্প্রে করতে হবে না। এমন সময়ে প্রচণ্ড রোদ থাকলে বোঁটা শুকিয়ে আম ঝরে যায়। বৃষ্টিতে আমের বোঁটা শক্ত হবে।” এ বার মরসুমের শুরু থেকেই উদ্যান পালন দফতর আম বিদেশে রফতানির উদ্যোগ নিয়েছে।
উদ্যান পালন দফতরের দাবি, চাষি, ব্যবসায়ী, রফতানিকারকদের নিয়ে প্রথম দফায় বৈঠক হয়েছে। কাতার, ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে এ বার ফজলি, হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগের মতো বেগমখাস, বউ ভুলানি, বৃন্দাবনী, কৃষাণভোগ, রাখালভোগ, মুলায়মজাম, ল্যাংড়া, মল্লিকার মতো ৭৫ রকমের আমও পাঠানো হবে। মালদহের আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, “উদ্যান পালন দফতরের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, বিদেশে আরও বিপুল পরিমাণে মালদহের আম রফতানি করা হোক। আমের ব্যবসা ভাল হলে জেলার অর্থনীতি চাঙ্গা হবে।”