অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা সফল করার আর্জি মহুয়ার। — ফাইল চিত্র।
আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত নিজেদের সমস্যা ভুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা সফল করতে হবে এবং ২৯ তারিখের পরে, সব সমস্যা শোনা হবে— বৈঠকে দলের নেতাদের এমনই জানালেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্ভাব্য সফরসূচি নিয়ে শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। যদিও সে সভায় কোনও কর্মসূচিই চূড়ান্ত করে জানানো যায়নি। এ দিনের সভার শুরুতেই জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘আগামী ২৮ এবং ২৯ এপ্রিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা জেলায়। আপনাদের অনেকেরই কিছু সমস্যা থাকতে পারে। সমস্যা আছে, জানিও। সবাইকে অনুরোধ, ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সে সব ভুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা সফল করতে নেমে পড়ুন। তার পরে, জেলা থেকে সকলের সমস্যা শোনা হবে।’’ সম্প্রতি একাধিক বার জেলার বিভিন্ন ব্লকে শাসক দলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে। এ দিনের বৈঠকেও একাধিক জেলা নেতা উপস্থিত ছিলেন না। জেলা তৃণমূলের তরফে অভিষেকের সম্ভাব্য সফরসূচি তৈরি হয়েছে। গোষ্ঠী সমীকরণে ‘সমস্যা’ থাকা ব্লকগুলিতে যাতে ঐক্যের ছবি তুলে ধরা যায়, তা মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছে সফরসূচি।
এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, জলপাইগুড়ি জেলায় দু’দিনে ছ’টি জনসভা করার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও দু’টি বাদে, বাকি সভাগুলি কোথায় হতে পারে, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে জেলা তৃণমূল নেতারা। প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেগুলির অনুমোদন হবে কি না, তা-ও বলতে পারছেন না দলের জেলা নেতারা। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটিতে দলের পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয় এক শ্রমিক নেতার। অভিষেকের জনসংযোগ কর্মসূচিতে কোন ব্লকে কোন নেতা থাকবেন, সে তালিকা পরে রাজ্য থেকে পাঠানো হবে বলে বৈঠকে জানান পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
সূত্রের দাবি, সে সময় তৃণমূলের এক শ্রমিক নেতা ওই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘‘আপনারা পাঠিয়ে দিলে হবে না। কোন ব্লকে, কে থাকবেন, সেটা পার্টি কমিটিই ঠিক করবে।’’ পরামর্শদাতা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ব্লকে-ব্লকে শাখা সংগঠনের যে কমিটি রয়েছে, সেগুলি দেখেই নাম পাঠানো হবে। এর পরে, রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী বুলু চিকবরাইক বলেন, ‘‘আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন। সবাই দলের ভাল চান। সে মতোই সব হবে।’’ এ দিন বৈঠকে ধূপগুড়ির একটি অঞ্চলে দলের অন্দরের ‘দ্বন্দ্বের’ কথা তুলে ধরেন এক নেতা। শুক্রবারই বানারহাট ব্লকের চার নেতা তৃণমূলের কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। যা নিয়ে মহুয়া গোপ বলেন, ‘‘আমি জানি না। আমার কাছে কিছু আসেনি।’’
অন্য দিকে, বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়ের টিপ্পনী, ‘‘এই কর্মসূচিতে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব বাড়বে না কমবে, সেটাই প্রশ্ন।’’