শহিদ দিবসের ২৪ ঘণ্টা পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাবার্তা হাতে পেল ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটি। ২৩ জুন পাঠানো মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি কোচবিহারে পৌঁছতে ৯৬ ঘণ্টার বেশি সময় লাগল কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছিটমহল বিনিময় কমিটির সদস্যরা। তা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন তাঁরা। ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “ওই চিঠি শুধু একটি শুভেচ্ছা বার্তা নয়। কূটনৈতিক স্তরে দুই দেশের সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে তার অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। শহিদ দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা ছড়িয়ে দিতে না পেরে আমরা অখুশি।” তিনি দাবি করেন, স্পিড পোস্টে একটি চিঠি কলকাতা থেকে কোচবিহার আসতে খুব বেশি হলে ৪৮ ঘণ্টা সময় নেবে। সেখানে কি করে ৯৬ ঘণ্টার বেশি সময় লাগল তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
ডাক বিভাগের কলকাতার পোস্ট মাস্টার জেনারেল সুব্রত দাস বলেন, ‘‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। কোচবিহারে স্পিড পোস্ট যেতে কত সময় লাগে তা নির্ভর করে ক’টায় পোস্ট করা হল এবং ঠিক কোথায় যাবে, তার উপরে। নির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ পেলে পিএমজি (উত্তরবঙ্গ) তা খতিয়ে দেখবেন।’’
গত ২৬ জানুয়ারি কোচবিহারের তিনবিঘায় ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় কমিটির পক্ষ থেকে শহিদ দিবস পালন করা হয়। ১৯৯২ সালের ২৬ জুন তিনবিঘা করিডরের বিরোধিতা করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে ২ জন আন্দোলনকারী মারা যান। তাঁদের স্মৃতিতেই ওই শহিদ দিবস পালন করা হয়। দুই দেশে থাকা ছিটমহলের মানুষেরা ওই শহিদ দিবসে অংশ নেন। এবারে স্থল সীমান্ত চুক্তি বিল সই হওয়ার পরে ছিটমহল বিনিময় শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই অবস্থায় এবারের শহিদ দিবস উৎসব অন্য মাত্রায় পৌঁছে যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য কমিটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু দিন আগেই চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন এই আশায় বুক বাঁধেন কর্মীরা। কিন্তু সেই চিঠির কোনও উত্তর না পেয়ে হতাশ ছিলেন কমিটির সদস্যরা। তবে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁর কোনও ছাপ ছিল না। হাজার হাজার মানুষ চোখের জল ফেলে শহিদ দিবস পালন করেন। তার একদিন পরে ২৭ জুন মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা হাতে পান দীপ্তিমানবাবু। মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকতেও পারলেও অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে এবং প্রত্যেককে শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী। দীপ্তিমানবাবু বলেন, “সময় মতো চিঠি হাতে পেলে অনুষ্ঠান অন্য মাত্রা পেত। যা হোক মুখ্যমন্ত্রীর এই শুভেচ্ছা বার্তা দু’পাশের ছিটমহলের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেব।”