বিক্রি: মায়ের সঙ্গে রজত রাউত। নিজস্ব চিত্র।
করোনা আবহে গত বছর লকডাউনের সময়ে পেশা বদল হয়েছে বাবার। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের উল্টোদিকে রাস্তার ধারে পলিথিন টাঙিয়ে চা ও খাবারের দোকান দিয়েছিলেন বাবা। প্রশাসনের নির্দেশে দোকান ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এর পর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় মায়ের সঙ্গে টেবিল পেতে দোকান চালাতে হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দুই ভাইকে।
রজত রাউত ও রাজীব রাউত দুই ভাই জলপাইগুড়ি সোনাউল্লা হাইস্কুল থেকে এ বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। করোনা আবহে প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ। পড়াশোনা শিকেয় উঠেছে বলে দাবি বাড়ির লোকেদের। চরম দারিদ্রের মধ্যে বেড়ে ওঠা দুই ভাই এখন পালা করে মায়ের সঙ্গে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকান সামালচ্ছে।
রজত বলে, ‘‘মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণ করেছি। পরীক্ষা আদৌ হবে তো? দোকান চালানোর পাশাপাশি যখন সময় পাচ্ছি পড়াশোনা করছি।’’
মা ববিতা রাউত বলেন, ‘‘করোনা তো আমাদের সব কিছু তছনছ করেছে। গত বছরের লকডাউনের সময় থেকে স্বামীর দুধের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের সামনে চা ও খাবারের দোকান দিয়েছিলাম। মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবে বলে দোকান ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এখন একটা টেবিল নিয়েই কোনও ভাবে দোকান চালাতে হচ্ছে।’’
সোনাউল্লা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনির্বাণ সেন বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা জগৎ। ছাত্রদের মধ্যে অনেকেই কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছে। শীঘ্রই আমরা অনলাইনে আবার ক্লাস শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে স্কুলে এনে বিশেষ ক্লাস করানো যায় কিনা তা নিয়েও আলোচনা চলছে।’’