ফাইল চিত্র।
২০১৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলের বিরুদ্ধে। পরীক্ষা চলাকালীন প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়ের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়কে সাসপেন্ড করা হয়েছিল বলেও দাবি পর্ষদের।
পর্ষদ সূত্রের খবর, এখনও সেই অভিযোগের তদন্ত চলছে। সেই কারণেই গত বছরের মতো এ বছরেও এই স্কুলকে মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র করা হয়নি বলে দাবি পর্ষদের। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, পরীক্ষাকেন্দ্র করা না হলেও এই বিদ্যালয়ের সাত জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যুক্ত করা হয়েছে।
এ বছরেও মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই প্রশ্নপত্র বাইরে বেরিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, পরীক্ষা শুরুর আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলা প্রশ্নপত্র ‘ভাইরাল’ হয়ে যায়। এই প্রসঙ্গে পর্ষদ সদস্য তথা জলপাইগুড়ি জেলা মাধ্যমিক পরীক্ষার আহ্বায়ক সুব্রত রায় বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে কোনও অভিযোগ জলপাইগুড়ি জেলায় নেই। জলপাইগুড়ি জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবরও নেই। শান্তিপূর্ণ ভাবেই প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষ হয়েছে।’’
সূত্রের খবর, ২০১৮ সালের প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডের পর থেকেই পর্ষদ বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ করেছে। পর্ষদের তরফে এ বছরেও যথেষ্ট সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ি, কোনও রকম ইলেকট্রনিক গ্যাজেট অথবা ক্যালকুলেটর নিয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষিকারাও মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে পারবেন না বলে পর্ষদ
ঘোষণা করেছে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের সামনেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে পর্ষদের তরফে। অভিযোগ, ২০১৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায় পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিট আগেই প্রশ্নের প্যাকেট খুলে প্রশ্ন ফাঁস করতেন।
ময়নাগুড়ির এক শিক্ষক বলেন, ‘‘পর্ষদ প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং নকল রুখতে বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করেছে। তবে পুলিশ প্রশাসনের তরফে পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্রে ঢোকার মুখেই সব পরীক্ষার্থী ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের ট্র্যাকার দিয়ে মোবাইল ফোন বা কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট আছে কি না তা পরীক্ষা করা উচিত।’’
সূত্রের খবর, ট্র্যাকার দিয়ে পরীক্ষা করার বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে পর্ষদ কথা বলেছিল। জলপাইগুড়ি জেলায় ৯৮টি পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্রে এই ধরনের ট্র্যাকার দিয়ে পরীক্ষা করার মতো পরিকাঠামো পুলিশের কাছে নেই বলে পুলিশ পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে।
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, অনেক সময় ব্যাপারটা বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরোর মতো হয়ে যায়। সেটা যাতে না হয় সে দিকে পুলিশ-প্রশাসন নজর রাখলেই ভাল। তা হলেই অপ্রীতিকর বিষয় এড়ানো যায়।