এ ভাবেই ফ্রিজে রাখতে হচ্ছে পদ্মফুল। — নিজস্ব চিত্র
ফুল রাখার হিমঘর নেই, গাদাগাদি করে ফ্রিজেই ঠাই হয়েছে পদ্মের। তাও পুরোপুরি জায়গা হচ্ছে না তার। প্রয়োজনের তুলনায় আরও একটু ছোট করে দেওয়া হচ্ছে ডাটা। যাতে কষ্টেসৃষ্টে সেখানেই রাখা যায় পদ্ম। কোচবিহারে পদ্মফুল নিয়ে এমনই অবস্থার তৈরি হয়েছে। ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, দিন কয়েক পরেই দুর্গাপুজো। এই সময় পদ্ম ঘরে না তুললে পরে আর পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া আবার সেপ্টেম্বরের শেষ দিকের বৃষ্টিতে অনেক পদ্ম গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাতে পদ্ম নিয়ে কিছুটা সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় এখন থেকে পদ্ম মজুত না করলে পরে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। কোচবিহারের হাসপাতাল মোড়ের ফুল ব্যবসায়ী সুব্রত চৌধুরী বলেন, “হিমঘর না থাকাতেই বড় সমস্যায় পড়তে হয়। ফ্রিজে বেশি ফুল রাখা সম্ভব হয় না। উপায়ও কিছু নেই। এক মাস আগে থেকে ফুল মজুত করতে পারলে সব দিক থেকে সুবিধে হয়। তা সম্ভব হয় না।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, কোচবিহার জেলায় পাঁচ শতাধিক দুর্গাপুজো হয়। সন্ধি পুজোর সময় ১০৮টি পদ্মফুলের প্রয়োজন হয়। রামচন্দ্র অকাল বোধনের সময় ১০৮ টি নীল পদ্ম দিয়ে দেবীর আরাধনা করেছিলেন। কোচবিহারে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে তেমন ভাবে পদ্ম ফুল চাষ হয় না। দিনহাটা ও গোসানিমারির কয়েকজন ওই ফুল চাষ করেন। কিছু জলা জায়গায় অবশ্য এমনিতেইও পদ্ম ফুল ফোটে। অনেকে তা সংগ্রহ করেন। জেলার ফুল ব্যবসায়ীরা তা কিনে নেন। পরে তা পুজো উদ্যোক্তারা কিনে নেন। স্বাভাবিক ভাবে একটি ফুলের দাম পাঁচ টাকার মতো পড়ে। এবারে অসময়ের বৃষ্টির জন্য তা ১০ টাকা তো বটেই তার থেকে বেশি দামে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাতে পুজো কমিটিগুলি চাপে পড়ে যাচ্ছে। কোচবিহার উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক খুরশেদ আলম জানান, কোচবিহারে যে পরিমাণ পদ্ম ফুলের দরকার হয়, তা চাষ হয় না। তাই বীরভূম, বাঁকুড়া থেকেও পদ্মফুল জেলায় আসে। তিনি বলেন, “ফুল চাষে উৎসাহ দিতে নানা ছাড় দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি পদ্মের চাষও বাড়বে।”
শুধু চাষ করলে হবে না, ওই ফুল কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী জানান, কোচবিহার তথা গোটা উত্তরবঙ্গে বহুমুখী হিমঘর নেই। শুধু আলু রাখার হিমঘর রয়েছে। তিনি বলেন, “বহুমুখী হিমঘর হলে ফুল রাখা নিয়ে আর সমস্যা হবে না। পদ্ম ফুল ফ্রিজেও রাখতে হবে না। সব্জির দামও অনেক কম হবে।” তা নিয়ে চেষ্টা চলছে বলে প্রশাসনিক আধিকারিকরা দাবি করেন। কোচবিহারের পান্থশালা পুজো কমিটির উদ্যোক্তা গোপাল দে বলেন, “আগাম বরাত দেওয়ার পরেও প্রতি বছর পদ্ম ফুল পেতে হয়রান হতে হয়। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকলে ভাল হয়।”