নোটের গেরোর প্রভাব মাছের দরেও

শীতের শুরু থেকেই নানা উৎসব-অনুষ্ঠানে বাজারে জমে ওঠে বিকিকিনি। নতুন গুড়ের মিষ্টি থেকে মাছ, দাম বাড়তে থাকে লাফিয়ে। এ বছর সে নিয়মে গেরো, নোট বাতিলের নির্দেশের জেরে ব্যবসা কমেছে। রাসমেলা হোক বা পাড়ার মুদির দোকান মুখ শুকনো ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৩৭
Share:

রবিবারেও এটিএমের সামনে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষায় বাসিন্দারা। জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

শীতের শুরু থেকেই নানা উৎসব-অনুষ্ঠানে বাজারে জমে ওঠে বিকিকিনি। নতুন গুড়ের মিষ্টি থেকে মাছ, দাম বাড়তে থাকে লাফিয়ে। এ বছর সে নিয়মে গেরো, নোট বাতিলের নির্দেশের জেরে ব্যবসা কমেছে। রাসমেলা হোক বা পাড়ার মুদির দোকান মুখ শুকনো ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

নগদ সমস্যার জেরে কমে গেল মাছের দামও। এ দিন রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজারে প্রায় সব মাছের দাম কেজি প্রতি গড়ে ৫০ থেকে ২০০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। দুই মাছ ব্যবসায়ী জয়ন্ত দাস ও জগবন্ধু দাসের দাবি, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর থেকে বিক্রি কমেছে। তাঁদের কথায়, ‘‘মাছ বেশি দিন পড়ে থেকে নষ্ট হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই সবাই যাতে কম বেশি মাছ কিনতে পারেন, তার জন্য পাইকারি বাজারে মাছের দাম কমে গিয়েছে। খুচরো বাজারেও দাম পড়ে গিয়েছে।’’ মোহনবাটী বাজারে দেড় কেজি থেকে দুই কেজির কাছাকাছি ওজনের রুই ও কাতলা ১৮০ টাকা মতো দরে বিক্রি হয়েছে। আড়াই কেজি বা তার বেশি ওজনের বোয়াল ২৫০ টাকা, সাড়ে তিন থেকে চার কেজির আড় ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মৌরলা মাছের দাম নেমে এসেছে ১৫০ টাকা কেজিতে। যেমন আ়ড়াই কেজির উপরে চিতলও মিেলছে কেজি প্রতি ৩০০ টাকা দরে। গলদা চিংড়িও সাড়ে তিনশো টাকায় বিক্রি হয়েছে।

জলপাইগুড়ি স্টেশন বাজারে মাছ বিক্রি করেন রাজেশ সাহা৷ তিনি মোবাইল অ্যাপসে টাকা নেওয়া শুরু করেছেন। বাবুপাড়া এবং রাউত বাগান একটি পানের দোকানেও মিলছে এই সুযোগ৷

Advertisement

নোটের গেরোয় জমেনি রাসমেলা। কোচবিহার জেলা বইমেলা নিয়েও চিন্তিত উদ্যোক্তারা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, বইমেলা চত্বরে মোবাইল এটিএম, পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) বা মাইক্রো এটিএম বসানোর ব্যাপারে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানান হবে। কোচবিহার শহরে এ দিন ভরসা বলতে সাগরদিঘি চত্বরের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম। ভোর থেকে দিনভর সেখানে ছিল বিশাল লাইন।

গাজল, কালিয়াচক বা বৈষ্ণবনগরের মতো প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে অনেকে মালদহ শহরে এসেছিলেন টাকা তুলতে। কিন্তু এ দিন মালদহ সদরের কোনও এটিএমই খোলেনি। ঝালং, বিন্দু, লাভা, গরুবাথানের পাহাড়ি গ্রাম থেকে রবিবার খুব ভোরে মালবাজারে এসে এটিএমের লাইনেও দাঁড়িয়েছেন অনেকে। ইচ্ছা ছিল টাকা তুলে মালবাজারের রবিবারের হাট থেকে বাজার করবেন। কিন্তু হাটের বেলা বয়ে গেলেও টাকার দেখা পাননি অনেক বাসিন্দাই।

রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর, শিলিগুড়িমোড়, সুপারমার্কেট, বিধাননগর, মোহনবাটী, উকিলপাড়া, নেতাজি সুভাষ রোড, বিদ্রোহীমোড়, কলেজপাড়া, বীরনগর, রাসবিহারী মার্কেট, দেবীনগর, বিবিডি মোড়, লাইনবাজার, হাসপাতাল রোড ও কসবা এলাকার বেশিরভাগ এটিএম ও ই-কর্নারে টাকা ছিল না। ফলে এ দিনও বহু বাসিন্দাকে টাকা তুলতে এসে অপেক্ষা করেই ফিরতে হয়েছে।

বালুরঘাটে দিনভর এটিএম বন্ধে রবিবারের হাট এবং বাজার প্রভাব পড়ল। এ দিন সকাল থেকে লোকজন শহরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় এটিএমে টাকা তোলার জন্য ছুটে বেড়ান। কিন্তু রাত থেকে ঝাঁপ বন্ধ। শনিবার সন্ধের পর শহরে কয়েকটি এটিএম চালু হয়েছিল। তাতে নতুন ৫০০টাকার নোট বের হচ্ছে খবর ছড়িয়ে পড়তে লম্বা লাইন পড়ে যায়। অবশ্য রাত ১১টা পর্যন্ত লাইন দিয়েও টাকা পাননি শহরের কংগ্রেস পাড়ার শিক্ষক শুভ্র ঘোষ, বেলতলাপার্কের ছোট বৃত্তিজীবী মহেশ রায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement