ফাইল চিত্র।
কোভিড পরিস্থিতির জেরে থমকে পড়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যায়ের ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (নাক)মূল্যায়ন। রাজ্য তথা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে কার ‘মান’ কেমন, তা ওই মূল্যায়ন থেকেই বুঝতে পারা যায়। সেই মতো পড়ুয়ারাও ওই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়ার জন্য ঝোঁকেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দূরশিক্ষা বিভাগের পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। ‘নাক’-এর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল কী কী পরিকাঠামো রাখতে হবে। ‘নাক’-এর মূল্যায়নে ৩.২৬ পয়েন্ট না পেলে এর পর দূরশিক্ষা বিভাগটি বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে শিক্ষকদেরই একাংশ উদ্বিগ্ন। তা ছাড়া, ওই পয়েন্ট পেলে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার পেতে পারে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিয়মমাফিক ‘নাক’-এর তরফে জানানো হলে তাদের কাছে ‘সেল্ফ স্টাডি রিপোর্ট’ জমা করবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই মতো তাদের প্রতিনিধি দল কবে যাবে জানিয়ে দেওয়া হয়। করোনার প্রথম ঢেউ কমে আসায় সেই মতো ‘নাক’-এর টিমের পরিদর্শনের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী আধিকারিকদের সমস্ত ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। সব ঠিক থাকলে মে মাসেই পরিদর্শন হবে বলে কথাও হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তেই ‘নাক’-এর প্রতিনিধিরা এই পরিস্থিতির মধ্যে আসতে পারবেন না দেখে তাঁরা আর ‘সেল্ফ স্টাডি রিপোর্ট’ চাননি। কারণ, সেই রিপোর্ট জমা করার তিন মাসের মধ্যে প্রতিনিধি দল পাঠায় নাক।
উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে নাকের কোনও প্রতিনিধিরাই এখন আসতে চাইবেন না। তাই নাক এখনও ‘সেল্ফ স্টাডি রিপোর্ট’ জমা করতে সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। কারণ, তা জমা করলে তিন মাসের মধ্যে তারা প্রতিনিধি পাঠাবে।’’ উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘নাক’-এর মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুত। ‘নাক’-এর তরফে জানানো হলেই তাঁরা ‘সেল্ফ স্টাডি রিপোর্ট’ জমা করে দেবেন।
নিজের দৃষ্টান্ত দিয়েই উপাচার্য জানান, ‘নাক’-এর প্রতিনিধি হয়ে মুম্বাইয়ে একটি কলেজ পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁরও। ছত্তীসগঢ়ে, দিল্লিতেও এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের কথা ছিল তাঁর। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির জন্য সে সব বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ জানান, পাঁচ বছর অন্তর ‘নাক’-এর মূল্যায়ন হয়। ২০১৬ সালে শেষ মূল্যায়ন হয়েছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের। ওই মূল্যায়নে ৩.০৫ পয়েন্ট পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ‘এ’ গ্রেড পায়। এ বছর পরবর্তী মূল্যায়ন হওয়ার কথা। সেই মতো মে মাসে পরিদর্শনের প্রস্তুতি চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকের ঘাটতি মেটাতে শূ্ন্যপদে নিয়োগ করে। এপ্রিলে সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির জেরে সেই মূল্যায়ন কবে হবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষা পাঠ্যক্রম বর্তমানে চলছে। তবে পরবর্তী এই মূল্যায়নে ৩.২৬ পয়েন্ট পেতে হবে। তা হলেই কর্তৃপক্ষ সেই পাঠ্যক্রম চালাতে পারবেন। কোভিড পরিস্থিতি এবং নানা কারণে সমাবর্তনও হয়নি ২০১৯ সাল থেকে।