তিনটি তাসেই রায়গঞ্জ কেন্দ্রের টিকিট পকেটে পুরলেন কানাইলাল অাগরওয়াল—এলাকার তৃণমূল ও কংগ্রেস নেতাদের অন্তত সে রকমই ধারণা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রথম তাসটি হল, দাড়িভিট কাণ্ডকে দক্ষতার সঙ্গে সামাল দেওয়া। বিজেপির হাত থেকে ওই আন্দোলনের রাশ তৃণমূলের দিকে নিয়ে আসায় তিনি অনেকটাই সফল বলে শাসক দলের দাবি। দ্বিতীয় তাসটি হচ্ছে, ইসলামপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা কানাইয়া আগাগোড়া এই এলাকাতেই রাজনীতি করেছেন। এলাকাটিকে তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। তার উপরে, হিন্দিভাষী ভোটারদেরও তিনি কাছের লোক। হিন্দিভাষী ভোটাররা এই সংসদীয় এলাকায় বড় প্রভাব ফেলবেন বলেই মত রাজনীতিকদের।
সেক্ষেত্রে বিজেপির ভোট তিনি কাটতে পারবেন বলে আশা তৃণমূলের। তৃতীয় তাসটি হল, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি ও তাঁর স্ত্রী দীপার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। কানাইয়ালাল রাজনীতি শুরু করেছিলেন কংগ্রেসের ছেলে হিসেবেই। তাই কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত এই এলাকায় কোথায় দুর্বলতা কোথায় জোর, সে খবর এই তৃণমূল প্রার্থীর কাছে রয়েছে বলেই মনে করছেন শাসক দলের নেতারা।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কানাইয়ার বক্তব্য, ‘‘প্রায় চার দশকের রাজনৈতিক জীবনে সাড়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে জন প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করে চলেছি। দল আমাকে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে যোগ্য মনে করায় আমি গর্বিত। জেলার উন্নয়ন, বাসিন্দাদের ঐক্য ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাসিন্দারা আমাকে জয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী।’’
আশির দশকে কানাইয়ালাল গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর পুরসভার জন্মলগ্ন থেকেই তিনি কাউন্সিলরের পদে রয়েছেন। গত দুই দশক ধরে তিনি একটানা পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রথমবার কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন।
কানাইয়ালাল ২০১৭ সালে ইসলামপুর পুরসভার বেশিরভাগ কংগ্রেস কাউন্সিলরকে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে পুরসভার ক্ষমতা হাতছাড়া হয় কংগ্রেসের। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর ইসলামপুরের কংগ্রেসের বেশিরভাগ নেতা ও কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন।
তবে গত বছর সেপ্টেম্বরে দাড়িভিট কাণ্ডের পরেই কানাইয়ালালের সাংগঠনিক ক্ষমতার পরিচয় বেশি করে পাওয়া যায় বলে তৃণমূল শিবিরের দাবি। কানাইয়ালালের স্ত্রী শকুন্তলা বর্তমানে ইসলামপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি যোগ্য প্রার্থীরও প্রয়োজন। তাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কানাইয়াবাবুকে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।’’ জেলার আটটি ব্লকে কানাইয়ার সমর্থনে দেওয়াল লিখনেরও কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।