একসঙ্গে: বৈঠকে গৌতম ও বিনয়। —নিজস্ব চিত্র।
ভোট প্রচারের কৌশল ঠিক করতে শনিবার শিলিগুড়িতে বৈঠকে বসল তৃণমূল এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মোর্চার বিধায়ককে তৃণমূল প্রার্থী করায় ইতিমধ্যেই পাহাড়ে প্রচার শুরু করেছে বিরোধীরা। জিএনএলএফ, সিপিআরএমের মতো স্থানীয় দলগুলো বলতে শুরু করেছে পাহাড়ের স্বতন্ত্র আন্দোলনে বিভেদ তৈরি করতেই অমর সিংহ রাইকে প্রার্থী করা হয়েছে। কী ভাবে বিরোধীদের ওই প্রচারের জবাব দেওয়া যায় তা ঠিক করতেই এ দিন বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে বলেই মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুধু পাহাড়েই নয়, মোর্চার বিধায়ক তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছে সমতলের দলগুলোও। এ দিন তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘পাহাড়ের সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্য ধরে রাখতে স্থানীয়দের বেশি করে সুযোগ দেওয়া জরুরি। মোর্চার সঙ্গে আমাদের জোট হয়েছে। তাই পাহাড়ে আমরা ওদের বেশি করে কাজের সুযোগ দিচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সমতলেও যেখানে পাহাড়ি জনজাতি আছে সেখানে আমাদের কর্মসূচি সফল করতে মোর্চা সহযোগিতা করবে।
গৌতম ছাড়াও এ দিন বৈঠকে পাহাড় তৃণমূলের সভাপতি এলবি রাই, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং, সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা এবং দুই দলের পাহাড় ও সমতলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিনয় বলেন, ‘‘তৃণমূলের সঙ্গে আমাদের জোট কোনও গোপন ব্যাপার নয়। প্রার্থী নিয়ে প্রশ্ন তোলার জায়গা নেই। কয়েকজন নেতা ছাড়া পাহাড়ে জিএনএলএফের কোনও অস্তিত্ব নেই।’’ তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে এ দিনের বৈঠকে পাহাড় ও সমতলে যৌথ ভাবে এলাকাভিত্তিক সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তরাইয়ের চা বাগান এবং পাহাড়ি জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় মোর্চার শীর্ষ নেতারা প্রার্থীকে নিয়ে প্রচার করবেন। দার্জিলিং ছাড়াও জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় বিনয় তামাংরা তৃণমূল প্রার্থী বিজয়চন্দ্র বর্মণের সমর্থনে প্রচার চালাবেন বলে ঠিক হয়েছে।
পাহাড় ও সমতলে বেশ কিছু আদিবাসী ভোট আছে। ঘাসফুলের পক্ষে সেই ভোট নিশ্চিত করতে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ নেতৃত্বের সঙ্গে তৃণমূল ও মোর্চা নেতারা বৈঠক করবেন বলে মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে। নিয়ম মেনে পদত্যাগ করার জন্য শুক্রবার কলকাতা গিয়েছেন অমর সিংহ রাই। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা অমরের। দেখা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। অমর বলেন, ‘‘আমি জোটের প্রার্থী। নির্দিষ্ট কর্মসূচি মেনেই জোট হয়েছে। বেশ কিছু দাবি-দাওয়া সামনে রেখে আমরা যৌথভাবে লড়াই করছি। সে ভাবেই কাজ হবে। যৌথ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হবে।’’
সূত্রের খবর এ দিন বৈঠকে বিমল গুরুং প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। গৌতম বলেন, ‘‘পাহাড়ে বিমলের কোনও প্রাসঙ্গিকতা এখন আর নেই। ১৮ মার্চ শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ১৯ মার্চ দার্জিলিং গোর্খা ভবন এবং ২৪ মার্চ চোপড়ায় যৌথ সভা হবে।’’