রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে তিন দিন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ছাড়াও একাধিক সরকারি হোর্ডিং, ফ্লেক্স, পোস্টার ও গ্লো-সাইনবোর্ড খোলা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। কেন প্রশাসনের তরফে সেগুলি এখনও পর্যন্ত খোলা হচ্ছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
রায়গঞ্জের বিডিও রাজু লামার অবশ্য দাবি, ‘‘নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর রবিবার রাত থেকেই প্রশাসনের তরফে রায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও প্রচারের সরকারি হোর্ডিং, ফ্লেক্স, পোস্টার ও গ্লো-সাইনবোর্ড খোলার কাজ শুরু হয়েছে। কেন এখনও পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় সেই সব থেকে গিয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রশাসনের তরফে সেগুলি খোলা বা ঢেকে দেওয়ার কাজ শেষ করা হবে।’’
রবিবার লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দেশজুড়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর কোথাও মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিদের ছবি আছে এমন কোনও প্রচার বা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচার করা হলে, তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল। সেইমতো কোথাও সরকারি উন্নয়নমূলক প্রচারের হোর্ডিং, ফ্লেক্স, পোস্টার ও গ্লো-সাইনবোর্ড থাকলে তা, নির্বাচনী আচরণবিধিকে লঙ্ঘন করে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বুধবার পর্যন্ত রায়গঞ্জ শহরের রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকার রবীন্দ্রভবনের বাইরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের তরফে লাগানো একটি হোর্ডিং চোখে পড়েছে। ওই হোর্ডিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়াও ওই ভবন তৈরি করতে ওই দফতরের কত টাকা খরচ হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, রায়গঞ্জ শহরের উকিলপাড়ার টাউনক্লাব মাঠ চত্বরে রায়গঞ্জ পুরসভার একটি ফ্লাডলাইটের খুঁটিতেও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি এবং শহরের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচারের গ্লো-সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে। কয়েকমাস আগে লাইটটি উদ্বোধনের দিন ওই সাইনবোর্ডটি পুরসভার তরফেই লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি, শহরের সুদর্শনপুর এলাকার একটি পেট্রলপাম্প চত্বর ও ডাকঘরের বাইরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সহ উজ্জ্বলা প্রকল্প ও একটি ব্যাঙ্ক পরিষেবার প্রচারের একটি করে হোর্ডিং ও ফ্লেক্স দেখা গিয়েছে।
উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের গাফিলতির জেরে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার তিন দিন পরও শহর জুড়ে সরকারি উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের প্রচারের হোর্ডিং, ফ্লেক্স, পোস্টার ও গ্লো-সাইনবোর্ড খোলা হয়নি। ফলে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলকে খুশি করতেই প্রশাসন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে কি না, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য ও বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাম পৃথক ভাবে দাবি করেন, নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর সরকারি উন্নয়নমূলক প্রচারের হোর্ডিং, ফ্লেক্স, পোস্টার ও গ্লো-সাইনবোর্ড খোলা বা ঢেকে দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। এখনও পর্যন্ত কেনও শহরের বিভিন্ন এলাকায় সেগুলি রয়ে গিয়েছে, তা প্রশাসনই বলতে পারবে।