লোকসভায় হেরেছেন। হেরেছেন বিধানসভাতেও। তারপরেও মোয়াজ্জেম হোসেনের উপর থেকে আস্থা হারাননি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ মালদহের প্রার্থী হিসেবে তিনি ফের নাম ঘোষণা করলেন মোয়াজ্জেমের। মোয়াজ্জেমও দ্বিতীয়বারের জন্য দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রে দল তাঁকে প্রার্থী করায় তা কাজে লাগাতে মরিয়া।
কলকাতার রেলওয়ে হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন মোয়াজ্জেম। ২০১৪ সালে সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছিলেন রাজনীতিতে নবাগত মোয়াজ্জেম। সে বছর তৃতীয় স্থানে ছিলেন তিনি। লোকসভা কেন্দ্রে হারলেও তাঁর উপর থেকে আস্থা হারাননি খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছরই রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে দলের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় মোয়াজ্জেমকে। ২০১৬ সালের বিধানসভাতেও প্রার্থী করা হয় তাঁকে। উত্তর মালদহের মালতীপুর বিধানসভা থেকে লড়াই করেছিলেন। ওই বিধানসভা কেন্দ্রেও লড়াই-এ তৃতীয় স্থানেই ছিলেন তিনি। দুই নির্বাচনে ভরাডুবি হলেও জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়নি মোয়াজ্জেমকে। লোকসভা ভোট ঘোষণার মাস দেড়েক আগে কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর যোগ দেন তৃণমূলে। মৌসম যোগ দিলেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে রদবদল হয়নি।
কেন বারবার করে মোয়াজ্জেমেই আস্থা রাখছেন নেত্রী তা নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। তবে তৃণমূলের একাংশের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাতেই চিকিৎসকের পদ ছেড়ে দিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন মোয়াজ্জেম। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত স্নেহধন্যও তিনি। একই সঙ্গে মালদহে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। দক্ষিণ মালদহের প্রার্থী পদ নিয়ে একাধিক দাবিদার ছিলেন। ফলে মোয়াজ্জেম ছাড়া অন্য কেউ প্রার্থী হলে দ্বন্দ্ব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। তাই মোয়াজ্জেমকে পুনরায় প্রার্থী করে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হল বলে মনে করছেন দলেরই জেলা নেতৃত্বের একাংশ।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও জেলায় ভাল ফল করেছে দল। আর মোয়াজ্জেমের নেতৃত্বেই পঞ্চায়েতে দল লড়াই করে সাফল্য পেয়েছিল। তারই উপহার হিসেবে ফের টিকিট পেয়ে গেলেন মোয়াজ্জেমই।” মোয়াজ্জেম বলেন, “দলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’’