রাজনীতিতে কী না হয়! একদিন তাঁর সঙ্গে বিরোধের জেরে তৃণমূল দলটাই ছেড়ে দিয়েছিলেন আব্দুল করিম চৌধুরী। সেই কানাইয়ালাল আগরওয়ালের বাড়িতেই তাঁকে জেতানোর পরিকল্পনায় বৈঠক! সেই বৈঠকে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা নিলেন কানাইয়ালাল। এমনও জানিয়ে দিলেন, দল যাঁকে প্রার্থী করেছে, তাঁকে জেতানোই সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
যদিও বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় করিম এ দিন ওই বৈঠকে থাকতে পারেননি। তবে তাঁর মনোনয়ন উপলক্ষে ব্লক স্তরের কর্মীদের নিয়ে ওই কর্মিসভায় উপস্থিত কানাইয়ালালের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি। আজ, সোমবার ইসলামপুর বিধানসভার উপনির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা করিমের। মন্ত্রী রব্বানি বলেন, ‘‘উনি মনোনয়ন জমা করার পরেই এলাকার কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করা হবে।’’ করিমকে এলাকায় যাতে অনেক বেশি সংখ্যক ভোটে জেতানো যায় তা নিয়েও কর্মীদের নির্দেশ দেন রব্বানি। কানাইয়ালাল কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘ওঁর (করিম) বাড়িতে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য উনি আসতে পারেননি। দল ওঁকে প্রার্থী করেছে। উনি প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক ভোটে আমরা জিতব।’’ ২০১৬ সালে এই কানাইয়ালালের বিরুদ্ধেই হারেন তৃণমূল প্রার্থী করিম। কংগ্রেস থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন কানাইয়ালাল। বামফ্রন্টের সঙ্গে জোটে সাড়ে সাত হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন কানাইয়ালাল। এর পরেই কানাইয়ালাল তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকেই তাঁর সঙ্গে করিমের বিরোধ শুরু। যার জেরে পরের বছরই দল ছাড়েন করিম। সেই করিমকেই ফের দলে টেনে নিয়ে একেবারে প্রার্থী করে দিয়েছে তৃণমূল। প্রথম দিকে এই এলাকায় শাসক দলের কে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে ইসলামপুর এই আসনটিতে করিমকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
রায়গঞ্জের প্রার্থী হওয়ার জন্য ইসলামপুরের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয় বিধায়ক তথা ইসলামপুর পুরসভা চেয়ারম্যান কানাইয়ালালকে। আগামী ১৯ এপ্রিল ইসলামপুরে উপনির্বাচন। আজ সকাল দশটার মধ্যে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এলাকার সকল কর্মীকে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন কানাইয়ালাল। এ দিন তিনি সিপিএমকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘করিম সাহেব নির্দল হয়ে দাঁড়ালে সিপিএম সমর্থন করতে চেয়েছিল বলে শুনেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন।’’ তবে দলকে প্রাধান্য দিয়ে প্রার্থীর হয়ে লড়াই করার জন্য ব্লক নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছে কর্মীদের।
এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামপুরের ব্লক সভাপতি জাকির হুসেন-সহ ব্লক স্তরের কর্মী-সমর্থকরা। আজ মিছিল করে গিয়ে মনোনয়ন জমা করার কথা করিমের। সেখানেও জেলাস্তরের নেতারা উপস্থিত থাকবেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।