প্রতীকী ছবি।
আলাদা রাজ্যের আন্দোলন এবং বিমল গুরুঙের পাহাড় ছাড়ার পর থেকে দার্জিলিঙের রাজনীতি থেকে কিছুটা ‘ব্যাকফুটে’ বিজেপি। তাই দলের কোনও নেতানেত্রীর বদলে এ বারে লোকসভা ভোটে হিমাচলপ্রদেশের বাসিন্দা, ধর্মগুরু সৎপাল মহারাজকে প্রার্থী করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে দলে।
দলীয় সূত্রের খবর, এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, সৎপাল মহারাজ, পাহাড়ের কাছে অত্যন্ত পরিচিত মুখ। গত কয়েক বছরে তিনি একাধিকবার পাহাড়ে এসেছেন। দার্জিলিঙে তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও যথেষ্ট। দ্বিতীয়ত, সমতলে বাঙালি থেকে অবাঙালি ভোটারদের কাছেও তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার বদলে ওই আসনে সৎপাল মহারাজকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের বিভিন্ন সংগঠনে।
বিজেপি সূত্রের খবর, মনোজ দেওয়ানদের মতো দলের পাহাড়ি নেতারা এবার স্থানীয় বাসিন্দা বা গোর্খা ভাষাভাষী কাউকে দার্জিলিং আসনে প্রার্থী করার পক্ষপাতী। তাঁরা পাহাড়ের তিনটি নাম রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দিয়েছেন। আবার দলের নীতি অনুসারে, জেতা আসনে প্রথমে পুরনো সাংসদকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু দলের একটি অংশের দাবি, সাংসদ অহলুওয়ালিয়া এ বার আর আসনটি নিয়ে বিশেষ উৎসাহিত নন। বিশেষ করে, গত কয়েক মাস ধরে সাংসদ পাহাড়ে যাননি। মাঝেমধ্যে শিলিগুড়ি এলেও দিল্লি থেকেই কাজকর্ম দেখাশোনা করছেন। যদিও পাহাড়ে এখনও যাঁরা গুরুং ঘনিষ্ঠ, তাঁদের সঙ্গে অহলুওয়ালিয়ার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
দলের নেতাদের একাংশ জানাচ্ছেন, বিনয় তামাং পাহাড়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্য সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলছেন। তিনি এনডিএ ছেড়ে আসার কথাও জানিয়েছেন। তাতে বিজেপি বিরোধী ভোটবাক্স তৈরি হয়েছে। আবার রাজ্যের শাসকদলও গোর্খা বা নেপালি ভাষাভাষী কাউকে প্রার্থী করার বিষয়ে আলোচনা করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাতে বিনয় ও অন্যদের কয়েক জনকে হয়তো সঙ্গে পাবে তারা। উল্টো দিকে বিজেপি সৎপাল মহারাজ প্রার্থী করলে তৃণমূলের এই উদ্যোগকে ধাক্কা দিতে পারবে বলে দলের ধারণা।
যদিও প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না বিজেপির স্থানীয় নেতানেত্রীরা। অহলুওয়ালিয়া বলেছেন, ‘‘এই নিয়ে আমার কিছু জানা নেই।’’ দলের উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক রথীন বসু বলেছেন, ‘‘দলের অনেকেই প্রার্থী হতে চাইছেন। অনেক নাম নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।’’
পাহাড়ে গুরুংয়ের সমর্থন ছাড়াও সমতলে অবাঙালি ভোটারদের একটি বড় অংশ এর আগে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু আন্দোলনের পরে পাহাড় পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। গুরুং নেই। বিনয়, মন ঘিসিংরা এখনও তৃণমূলের দিকে। এই সময়ে সৎপাল মহারাজকে প্রার্থী করার পক্ষে মত দিয়েছেন দলের একাংশ।