ঘাসফুলে প্রার্থী অমর

ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়ক। হলেন তৃণমূলের প্রার্থী। অমর সিংহ রাইকে জোড়া ফুল চিহ্নে দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, এই ভাবে তিনি পাহাড় ও সমতলের মধ্যে সংযোগ তৈরি করলেন।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৫:৩০
Share:

ছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিধায়ক। হলেন তৃণমূলের প্রার্থী। অমর সিংহ রাইকে জোড়া ফুল চিহ্নে দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, এই ভাবে তিনি পাহাড় ও সমতলের মধ্যে সংযোগ তৈরি করলেন। অমর জানিয়েছেন, দু-এক দিনের মধ্যেই বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েই মনোনয়ন পেশ করবেন।

Advertisement

কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম ঘোষণার পরই শিলিগুড়িতে দলীয় প্রার্থীর প্রচারে দেওয়াল লিখন শুরু করেন তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা। দীর্ঘদিন বাদে পাহাড়ের কোনও শক্তিশালী প্রার্থীকে দার্জিলিং কেন্দ্রে দাঁড় করল সমতলের কোনও দল। তৃণমূল নেতাদের একাংশের বক্তব্য, মমতা সে জন্যই পাহাড়-সমতলের সংযোগ তৈরির কথা বলেছেন।

তবে তৃণমূল নেতাদেরই আর একটি অংশের মতে, পাহাড়ে মোর্চার একচ্ছত্র ক্ষমতায় ভাগ বসিয়ে দলীয় শক্তি বাড়াতেই নিজেদের প্রার্থী দিয়েছে দল। পাহাড় তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘বিমল গুরুংয়ের উপরেও একসময় ভরসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতাকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন বিমল। তবে বিমলকে নিয়ে যে ভাবে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে, তাই সেই পরিস্থিতি তৈরি হোক সেটা চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী। তাই অমর সিংহ রাইকে প্রার্থী করে মোর্চার সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখা ও দলীয় শক্তি বৃদ্ধি— দু’দিকই বজায় রেখেছেন তিনি।’’ অমর বলেন, ‘‘পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য তৃণমূল ও মোর্চা একসঙ্গে কাজ করছে। সেই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিনয় তামাং অবশ্য তৃণমূল নেতার যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দেশের ৩২টি দলকে নিয়ে বিজেপি-বিরোধী যে জোট তৈরি হয়েছে, আমরা তার সঙ্গী। আমাদের মূল লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে। আমাদের দাবি ছিল স্থানীয় প্রার্থী হতে হবে। সেই দাবি মেনে নিয়েছেন মমতা।’’ কেন অমরকে প্রার্থী করা হল? তৃণমূল নেতাদের যুক্তি, দার্জিলিং কেন্দ্রের জন্য তুলনায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তির, গ্রহণযোগ্যতা সম্পন্ন রাজনৈতিক প্রার্থী প্রয়োজন ছিল। এ বারে শুরু থেকেই স্থানীয় কাউকে দাঁড় করানোর বিষয়ে জোড় দিয়েছে পাহাড়ের সব দল। প্রার্থী ও প্রতীক নিয়ে তৃণমূল ও মোর্চার মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে। মোর্চাকে প্রার্থী অথবা প্রতীক, যে কোনও একটি বাছার কথা বলে তৃণমূল। মোর্চা নিজেদের লোককে প্রার্থী করার কথা জানিয়ে দেয়। এই ক্ষেত্রে শুরু থেকেই মমতা ও বিনয়ের পছন্দের তালিকায় ছিলেন অমর।

বিমলপন্থী মোর্চা ও বিরোধী জোটের অনেকের কাছেও অমরের গ্রহণযোগ্যতা আছে। বিমলের বিরোধিতা করে অন্দোলন থেকে সরে এসে মোর্চার পৃথক কমিটি তৈরির পরেও পাহাড়ে অমরের বিরুদ্ধে কোনও বিক্ষোভ হয়নি। দার্জিলিং হিল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি, পাহাড়ের শিক্ষক নিয়োগ-সহ বেশ কিছু বিষয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন অমর। শুরু থেকেই জিটিএ-র শিক্ষা বিভাগ সামলাচ্ছেন তিনি। পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরির জন্য যে বিশেষ কমিটি তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই কমিটির প্রধান তিনি করেছিলেন অমরবাবুকে। পাহাড় তৃণমূলের সভাপতি এলবি রাই বলেন, ‘‘এখন পাহাড়ে আমরা অনেক বেশি শক্তিশালী। পাহাড়ের শান্তি ও উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার লক্ষ্যে লড়বে দল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement