রেললাইনের উপর পড়ে ধাতব বস্তু। —নিজস্ব চিত্র।
রেললাইনের উপর পড়ে নির্মাণসামগ্রী। দূর থেকে তা নজরে আসতেই তড়িঘড়ি ট্রেন থামিয়ে দেন চালক। তাঁর উপস্থিত বুদ্ধির কারণে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল ডাউন কামাখ্যা আনন্দবিহার টার্মিনাল স্পেশ্যাল এক্সপ্রেস। ট্রেন দাঁড় করিয়ে চালক খবর দেন রেলবিভাগে। খবর পেয়ে রেলের আধিকারিকেরা এসে ওই নির্মাণ সামগ্রী রেললাইনের উপর থেকে সরান।
ঘটনাটি ঘটেছে সেবকের ৩২/৪ সিগন্যাল পোস্টের কাছে। কে বা কারা রেললাইনের উপর নির্মাণসামগ্রী ফেলে রেখে গেলেন, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। রেল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ। গোটা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে নিয়ে বেশ কয়েক জায়গায় অভিযানও চালাচ্ছেন রেল পুলিশের আধিকারিকেরা। ঘটনায় আরও তিন-চার জন জড়িত বলে জানা গিয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে ০৫ মিনিট নাগাদ ডাউন ক্যাপিটাল এক্সপ্রেস যখন বাগ্রাকোটের দিক থেকে শিলিগুড়ির দিকে যাচ্ছিল, তখন মংপয়ের রুংঢুং এলাকায় রেললাইনের উপর দু’টি ধাতব বড় কিছু পড়ে থাকতে দেখেন ট্রেনের চালক। তবে চালক ট্রেন দাঁড় করানোর সুযোগ পাননি। ওই ধাতব বস্তুর উপর দিয়ে ট্রেন চলে যায়। সেবক স্টেশনে গিয়ে রেল আধিকারিকদের বিষয়টা জানান। এর পর বিকেল ৩টে ৩১ মিনিট নাগাদ ডাউন আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস ওই রুট দিয়ে শিলিগুড়ির দিকে যাওয়ার সময় চালক, রুংঢুং এলাকায় লাইনের উপর লোহার ধাতব জাতীয় নির্মাণসামগ্রী পড়ে থাকতে দেখেন। দেখা মাত্রই ট্রেন দাঁড় করিয়ে দেন তিনি। তিনি রেল আধিকারিকদের খবর দেন। রেলকর্মীরা এসে রেললাইনের উপর ওই সামগ্রী সরান। তার পর ওই লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
তবে প্রশ্ন উঠছে, কারা এই ভাবে জঙ্গল এলাকার নির্জন স্থানে এই লোহার সামগ্রী রেললাইনে ফেলে রেখেছিলেন? বিষয়টি নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, ‘‘একটি দুষ্কৃতীর দল এই কাজ করেছে। ওই এলাকায় রেলের খুঁটি বসানোর কাজ চলছিল। সেই কাজেই ব্যবহার করা সমগ্রী চুরি করতে চেয়েছিল অভিযুক্তেরা। সেই লোহার ড্রামগুলি লাইনে রেখেছিল যাতে ট্রেন গেলে সেগুলি ছোট ছোট টুকরো হয়ে যায়। এতে চুরি করতে সুবিধা হবে। ইতিমধ্যে আমরা এক জনকে গ্রেফতার করেছি। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’