একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়ার দাবিতে শিক্ষকদের স্কুল থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিলেন অভিভাবক সহ পড়ুয়াদের একাংশ। মালদহের রতুয়ার আড়াইডাঙ্গা ডিবিএম হাই স্কুলে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, এই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করলেও তাঁদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া এলাকার একটি গার্লস স্কুল থেকে পাশ করা ছাত্রীদের ভর্তি নিতেও স্কুল কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করছেন বলে অভিযোগ। আর তার জেরেই এ দিন স্কুল শুরু হওয়ার পর শিক্ষকদের বের করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলে তালা ঝোলানোর জেরে এ দিন স্কুলে আর পঠন-পাঠন হয়নি।
শুধু তাই নয়। একাদশে ভর্তির সমস্যা না মেটা পর্যন্ত স্কুলের তালা খুলতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কেননা বুধবার থেকে স্কুলে প্রথম ইউনিট টেস্ট শুরু হওয়ার কথা। ফলে পরীক্ষা নেওয়া যাবে কি না, তা নিয়েই সংশয় তৈরি হওয়ায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে তা দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। রতুয়া-২ ব্লকের বিডিও মোহন মাজি বলেন, ‘‘বুধবার স্কুলে অভিভাবক-সহ সর্বস্তরের বাসিন্দাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ভর্তি নিয়ে সমস্যার পাশাপাশি যাতে স্কুলের পঠন-পাঠন স্বাভাবিক হয় তা দেখছি।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশিস চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। দ্রুত যাতে সমস্যা মেটে তা দেখছি।’’
স্কুল সূত্রে জানা যায়, স্কুলে একাদশ শ্রেণীতে আসন রয়েছে ২৪০টি। নম্বরের ভিত্তিতে এর মধ্যেই ১৯০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু যাদের নম্বর একেবারেই কম, স্কুল থেকে পাশ করলেও নিয়ম মেনেই তাদের নেওয়া সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি এলাকার গার্লস স্কুলেও উচ্চমাধ্যমিক রয়েছে। কিন্তু ওই স্কুলে না পড়ে তাদেরও বেশিরভাগ পড়ুয়া এখানে ভর্তি হতে চেয়ে দরবার শুরু করে। তাদের মধ্যেও নম্বরের ভিত্তিতে কয়েকজনকে নেওয়া হলেও বাকিদের নেওয়া হয়নি। এরপরেই এ দিন কেন তাদের ভর্তি নেওয়া হবে না, সেই দাবি তুলে স্কুলে হাজির হয় পড়ুয়াদের পাশাপাশি অভিভাবকদের একাংশ। স্কুল কর্তৃপক্ষ অনড় থাকায় দুপুর ১২টায় শিক্ষকদের বাইরে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে পড়ুয়ারা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানবেন্দ্র কুমার জানান, ‘‘ভর্তির তো একটা পদ্ধতি রয়েছে। যোগ্যতা বিচার করেই যতগুলো আসন রয়েছে তার ভিত্তিতে তালিকা হয়েছে। এবার বাকি ছাত্রদের ভর্তি নেব কী ভাবে। সমস্যার কথা বিডিও ও স্কুল পরিদর্শককে জানিয়েছি।’’
ওই স্কুল থেকে পাশ করা পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের অভিযোগ, এই স্কুল থেকে পাশ করলেও কেন তাদের নেওয়া হবে না? এলাকায় আর কোনও স্কুল নেই। এ দিকে গার্লস স্কুল থেকে উত্তীর্ণদের অভিভাবকদের দাবি, গার্লস স্কুলটি নির্জন এলাকায়। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে।