সাড়ে ১০টার পরেও ইংরেজবাজারে কোঠাবাড়ি বাজার চলছে। অনেকের মাস্কও নেই।—নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে চলছে মালদহে। জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। চার জনের মৃত্যুও হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে রোগ রুখতে গত সপ্তাহে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভা এলাকায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল প্রশাসন। কিন্তু তাতেও রোগে লাগাম টানা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার থেকে সাত দিনের জন্য জেলার দুই শহর এবং কালিয়াচকের তিনটি এলাকায় কার্যত লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছে প্রশাসন ও পুলিশ।
গ্রামগঞ্জের পাশাপাশি দ্রুত রোগ ছড়াচ্ছে জেলার দুই শহর ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহে। ইংরেজবাজার শহরে এখনও পর্যন্ত ১২৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। শহরের দু’জন করোনা আক্রান্ত রোগী মারাও গিয়েছেন। পুরাতন মালদহ শহরেও আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছুঁইছুঁই। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসক মহলের একাংশের পাশাপাশি বাসিন্দাদের দাবি, সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজন পূর্ণ লকডাউন।
৩০ জুন সংক্রমণ ঠেকাতে দুই শহরে কিছু বিধিনিষেধ চালু করেছিল প্রশাসন। কিন্তু তাতেও সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, সংক্রমণ ঠেকাতে এ বার দুই শহরের পাশাপাশি কালিয়াচক, জালালপুর এবং সুজাপুর সদরে কার্যত লকডাউন করা হচ্ছে। বুধবার সকাল থেকে সাত দিন পর্যন্ত এই বিধি কার্যকর থাকবে। বেলা ২টো পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাবেচা চললেও তার পর থেকে সমস্তই বন্ধ হবে, বাইরে বার হতেও নিষেধাজ্ঞা থাকবে। সোমবার বিকেলে মালদহ জেলা প্রশাসনিক ভবনে এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, দুই পুরসভার প্রশাসক, মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলাশাসক অশোক মোদক বলেন, ‘‘বুধবার থেকে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে জেলার দুই শহর এবং কালিয়াচকের তিনটি জায়গায়। এই সিদ্ধান্তের কথা রাজ্য সরকারকে জানানো হয়েছে। বিধি-নিষেধ সর্বত্র প্রচার করা হবে।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘বিধি ভাঙা হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীরা সব রকম ভাবে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন।’’
প্রশাসন ও পুলিশ কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্বস্তিতে ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ ও কালিয়াচকের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের ঢিলেঢালা মনোভাবে অপ্রয়োজনীয় কারণে রাস্তায় বের হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। মাস্ক পড়ছেন না অনেকেই।