—প্রতীকী চিত্র।
প্রতিনিয়ত বাড়ছে শহর। চাপ বাড়ছে যানবাহনের। তার ফলে গত কয়েক বছরে যানজট মাত্রাছাড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। শহরের বিকল্প পরিবহণ হিসেবে মেট্রো রেল বা মনোরেলের দাবিও উঠতে শুরু করে কয়েক বছর ধরে। কিন্তু কোনও বাজেটেই কেন্দ্রীয় সরকার তার সমীক্ষার জন্য অর্থ বরাদ্দ অবধি করেনি। যার জেরে ক্ষুব্ধ শহরবাসী। রাজ্য সরকারই বা কেন এমন কোনও প্রস্তাব পাঠায়নি, সেই প্রশ্নও উঠেছে। শহরবাসীর দাবি, রাজ্য এবং কেন্দ্র দুই দলকেই যৌথভাবে এই প্রকল্পের জন্য পদক্ষেপ করতে হবে।
শহর বাড়তে বাড়তে একদিকে শালুগাড়া অন্য দিকে বাগডোগরা পৌঁছে গিয়েছে। অন্যদিকে চম্পাসারি, সুকনা থেকে আশিঘর, বাইপাস। এ সবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কমিশনারেটের এলাকাও। অথচ বাড়েনি বাড়তি যান সামাল দেওয়ার ব্যবস্থা। তার জেরে শিলিগুড়িতে তীব্র যানজট এখন নিয়ম। শেষ লোকসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ি শহর থেকে প্রচুর ভোট পেয়েছে বিজেপি। তার পর থেকেই শহরবাসীর মধ্যে মনোরেল বা মেট্রো রেলের ব্যাপারে নতুন করে আশা জেগেছে।
শিলিগুড়িতে যে মেট্রোর মতো পরিষেবা প্রয়োজন, তা প্রথম লেখা হয় আনন্দবাজারের পাতায়। সেই সময়ে, অর্থাৎ ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি পুরসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটক রেলবোর্ডের কাছে প্রস্তাব দেন, শহরে অন্তত মেট্রো রেলের জন্য সমীক্ষা করা হোক। সুজয় বলেন, ‘‘রেলবোর্ডের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, এনজেপি থেকে নকশালবাড়ি পর্যন্ত অন্তত সমীক্ষা হোক। কিন্তু তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করল না কেন্দ্র। কেন করা হল না? এমন কোনও প্রকল্প হলে রাজ্য কি বাধা দেবে?’’
শহরে শালুগাড়া থেকে চেকপোস্ট হয়ে মাল্লাগুড়ি, জংশন, হাসমিচক, এনজেপি হয়ে বাগডোগরা পর্যন্ত মেট্রো রেল করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে মত দিয়েছেন অনেকেই। তাঁদের দাবি, শহরকে যানজট মুক্ত করতে মেট্রোরেল বা মনোরেল নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সব স্তরেই ভাবা হোক।
হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘কেন্দ্রের যেমন অবিলম্বে রেলকর্তাদের নিয়ে সমীক্ষা শুরু করানো উচিত, তেমনই রাজ্যও উচিত কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব পাঠানো।’’
এখন পর্যন্ত বিকল্প পরিবহণের এই প্রস্তাব কেবলমাত্র খাতাকলমেই রয়ে গিয়েছে। বিজেপি সূত্রে দাবি, এর আগে তাদের এক সাংসদ এই নিয়ে প্রস্তাবও পেশ করেছিলেন। কাজের কাজ কিছু হয়নি। শহরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবামূলক কাজের দিকে কবে দুই সরকার নজর দেবে, সেটাই এখন প্রশ্ন।