—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
তখন টিপটিপ করে বৃষ্টি চলছে। মোটরবাইকে এক দম্পতি তোর্সা সেতু দিয়ে যাচ্ছিলেন কোচবিহারের পথে। সেতুর একাধিক জায়গায় পিচের চাদর উঠে গর্ত হয়েছে। তাতে জমেছে জলও। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেই গর্তেই পড়ল মোটরবাইকের চাকা। ছিটকে মাটিতে পড়লেন দম্পতি। বড় কোনও ক্ষতি না হলেও হালকা আঘাত পেলেন দু’জনেই।
শুধু তোর্সা সেতু নয়, ‘বেহাল’ রাস্তায় এমন ছোটখাট দুর্ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটছে কোচবিহার শহরের একাধিক রাস্তায়। অভিযোগ, সিলভার জুবিলি রোডে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দুর্গাবাড়ি লাগোয়া রাস্তা দিয়ে দুলতে দুলতে যাত্রীবাহী বাস পৌঁছয় ডিপোয়। কোচবিহার শহর ও গ্রামের একাধিক রাস্তারও এখন এমনই অবস্থা। সামনেই পুজো। তার আগে, রাস্তার এমন হালে ফুঁসছে গ্রাম-শহর। ওই রাস্তাগুলির অধিকাংশই পূর্ত দফতরের অধীন। পূর্ত দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘পুজোর আগেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে।’’
কোচবিহার শহর থেকে একাধিক রাস্তা বেরিয়েছে। একটি রাজ্য সড়ক দিনহাটা-মাথাভাঙার দিকে গিয়েছে। ঘুঘুমারিতে গিয়ে ওই রাস্তা দুই ভাগ হয়েছে। আর একটি রাজ্য সড়ক কোচবিহার শহর থেকে খাগরাবাড়ি হয়ে আলিপুরদুয়ারে গিয়েছে। ওই রাস্তাটি খাগরাবাড়ি, পুন্ডিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ির দিকে গিয়েছে। সেটি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। ওই রাস্তাগুলির মধ্যে দিনহাটা ও মাথাভাঙা যাওয়ার রাস্তায় কয়েকটি জায়গা বেহাল হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার পুরসভা এলাকার ৭৭টি রাস্তা পূর্ত দফতরের অধীন রয়েছে। ওই রাস্তাগুলির ৪২টির অবস্থা খুবই খারাপ। এ ছাড়া, ২৭টি কালভার্টের অবস্থাও খারাপ। সে সব তথ্য তুলে ধরে পূর্ত দফতরের কাছে সংস্কারের আর্জি জানিয়েছে পুরসভা। পুরসভা এলাকার বাসিন্দা, সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলরী সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে শহরের একাধিক রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। কোনও সংস্কার হচ্ছে না। মানুষের পরিষেবা নিয়ে পুরসভা বা পূর্ত দফতর কারও কোনও ভূমিকা নেই।’’ তোর্সা সেতুও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম একটি রাস্তার সংযোগ হয়েছে তোর্সা সেতুর মাধ্যমেই। অথচ, সে দিকে কারও নজর নেই বলে অভিযোগ। প্ৰতিদিন ওই রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। হাজার হাজার মানুষ নিত্যদিন ওই সেতু দিয়ে মোটরবাইক, সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করেন। তাঁদের মধ্যে তাপস ধর, রঞ্জিত বর্মণ বলেন, ‘‘সেতুর রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।’’