Alipurduar

গুলি-মৃত্যুতে ধর্না বনবাসীদের

রবিবার গভীর রাতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কোদালবস্তি রেঞ্জের বড়ডাবরি-৮ নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে বনকর্মীদের ছোড়া গুলিতে বিমল রাভা নামে এক বনবস্তিবাসী মারা যান। বনকর্তারা অবশ্য শুরু থেকেই দাবি করেন, রাতে কাঠ পাচারকারীরা জঙ্গলের ভিতরে গাছ কাটছিল। বনকর্মীরা কাছে যেতেই তাঁদের আক্রমণ করে পাচারকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:২৪
Share:

ধর্নায়: বিমল রাভার মেয়ে ও স্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

জলদাপাড়ার জঙ্গলে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনে নামলেন আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন বনবস্তির বাসিন্দারা। গুলির ঘটনায় অভিযুক্ত বনকর্মীকে গ্রেফতার ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডুয়ার্সকন্যার সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ বন জন শ্রমজীবী মঞ্চের ডাকে এই অবস্থানে ছিলেন মৃত যুবকের স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে। ছিলেন জেলার মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরাও।

Advertisement

রবিবার গভীর রাতে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কোদালবস্তি রেঞ্জের বড়ডাবরি-৮ নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে বনকর্মীদের ছোড়া গুলিতে বিমল রাভা নামে এক বনবস্তিবাসী মারা যান। বনকর্তারা অবশ্য শুরু থেকেই দাবি করেন, রাতে কাঠ পাচারকারীরা জঙ্গলের ভিতরে গাছ কাটছিল। বনকর্মীরা কাছে যেতেই তাঁদের আক্রমণ করে পাচারকারীরা। আত্মরক্ষায় গুলি চালান এক বনকর্মী। পরে জঙ্গলে বিমলকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও বিমলের পরিবার কিংবা স্থানীয় বাসিন্দারা বন দফতরের দাবি খারিজ করেছেন। এ দিন বিমলের স্ত্রী অনিতা ফের অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন সন্ধেয় তাঁর স্বামী গরু খুঁজতে জঙ্গলে গিয়েছিলেন। তিনি মানসিক ভাবে তেমন সুস্থ নন। তাই জঙ্গলের ভিতরে রাস্তা হারিয়ে ফেলেন। গভীর রাতে বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছনোর আগেই বনকর্মীরা তাঁকে গুলি করে খুন করেন। ঘটনার পরই উত্তরবঙ্গের শীর্ষ এক বনকর্তার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযুক্ত বনকর্মীকে সোমবার ‘ক্লোজ়’ করে বন দফতর। কিন্তু এ দিন অবস্থানে যোগ দিতে এসে বিমলের দুই ছেলেমেয়ে ওই অভিযুক্ত বনকর্মীর গ্রেফতারি দাবি করেন।

এ দিনের অবস্থানে জেলার বিভিন্ন বনবস্তির বাসিন্দারা যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরাও। আলিপুরদুয়ারের এক বেসরকারি সংগঠনের বক্তব্য, বনকর্মীদের হাতে বন্দুক দেওয়া হয় বন্যজন্তুদের তাড়ানোর জন্য। কাউকে মারার জন্য নয়। উত্তরবঙ্গ বন জন শ্রমজীবী মঞ্চের আহ্বায়ক লালসিং ভুজেল বলেন, ‘‘যে বন দফতরের বিরুদ্ধে গুলি করার অভিযোগ, সেই দফতরেরই তদন্ত কখনও নিরপেক্ষ হতে পারে না। তাই আমরা চাই, গোটা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক। তার আগে অভিযুক্ত বনকর্মীকে গ্রেফতার করা হোক।’’ রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত নিরপেক্ষ ভাবেই করা হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement