—ছবি পিটিআই
কালিম্পংয়ে গানের জলসার ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দুই মহিলার। রবিবার রাতে কালিম্পং শহরে মেলার মাঠে ওই ঘটনা ঘটে। জলসায় প্রচণ্ড ভিড়ে দর্শকদের মধ্যে হুড়োহুড়ির জেরেই ওই দুর্ঘটনা বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ঘটনায় হয়েছেন পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রশাসনের তরফে ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। তবে ওই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর অভিযোগ, অনুষ্ঠানে ভিড় সামলাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিল বলেই হুড়োহুড়ির জেরে এই দুর্ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে তিনি মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিও তুলেছেন। যদিও লাঠি চালানোর কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, মৃতেরা হলেন বিনীতা গুরুং (৩৯) এবং অনীতা ছেত্রী (৪৬)। ঘটনায় জখমদের দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিলিগুড়িতে আনা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। দুই নাবালিকা ছাড়াও আরও এক মহিলা কালিম্পং জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় ইতিমধ্যেই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের দাবি, কালিম্পং শহরে মেলার মাঠে নেপালের কোনও শিল্পীর গানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় ২৫ হাজার মতো দর্শক জডো হন। কিন্তু বাইরে বেরনোর গেট একটিই রাখা হয়েছিল। বেরনোর সময় ঠেলাঠেলি বা হুড়োহুড়িতে কয়েকজন মহিলা পড়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। ঠেলাঠেলির জেরে আরও কয়েকজন দর্শক তাঁদের উপর পড়লে তাঁরা অচৈতন্য হয়ে পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কয়েকজনকে কালিম্পং জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই দু’জনকে মৃত বলে জানানো হয়।
কারা অনুষ্ঠানের অনুমতি দিয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন যেমন উঠেছে, তেমনই আয়োজকেরা কেন নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেনি, তা নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কালিম্পংয়ে। জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রী বলেন, ‘‘প্রশাসন তো অনুমতি দিতেই পারে। কিন্তু আয়োজকদের সচেতন থাকা উচিত ছিল।’’
বিষয়টি নিয়ে দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে এ দিনই একটি চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন। পুলিশ কেন এ রকম অনুষ্ঠানে লাঠি চালাল এবং দুর্ঘটনার পরেও কেন অনুষ্ঠান চলল, তা নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। একই সঙ্গে মৃতদের পরিবার এবং জখমদের ক্ষতিপূরণের দাবিও তুলেছেন তিনি।
পুলিশের দাবি, লাঠি চালানো হয়নি। কালিম্পং জেলা পুলিশ সুপার হরিকৃষ্ণ পাই বলেন, ‘‘ওই জলসা পুলিশের অনুষ্ঠান ছিল না। পুলিশ লাঠি চালায়নি। তবে হুড়োহুড়ির দিকে যাতে আরও বেশি লোক না যায়, সেজন্যই পুলিশ আটকেছে বলেই অনেকের প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে।’’