পুরভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে শপথ নিচ্ছেন অশোক ভট্টাচার্য-সহ বাম প্রার্থীরা। সোমবার শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
মাঠে নেমেও সরে গিয়েছেন মন্ত্রী গৌতম দেব। প্রার্থী ঘোষণার পরে দলীয় কর্মীদের অসন্তোষ সামনে এসে পড়ায় মুখ পুড়েছে শাসক দলের।
প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে রাস্তায় আছড়ে পড়েছে বিজেপি-র অন্তর্কলহের চেহারাটাও। উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষককে কার্যত ‘বন্দি’ করে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে কসুর করেনি টিকিট না-পাওয়া ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
এই ফাঁকে শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের স্বচ্ছ ‘দুর্নীতিমুক্ত’ পুরসভা দেওয়ার অঙ্গীকার করে সোমবার মিছিল করে মনোনয়পত্র দাখিল করল বামেরা। এ দিন মিছিল শুরুর আগে, প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বামফ্রন্টের ৪৬ জন প্রার্থীকে নিয়ে হিলকার্ট রোডে দাঁড়িয়ে লিখিত শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে সই করিয়ে নেন‘ক্ষমতায় এলে আমরা প্রলোভন, ভীতি, স্বার্থ ভাবনাকে পরাজিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব।’ তার পর মিছিল করে গিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন তাঁরা।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারের দাবি, সরকারি টাকা খরচ করে একের পর এক নাগরিক কনভেনশন ডেকে তাতে নিজেকে মেয়র হিসেবে তুলে ধরার পরে লড়াই শক্ত বুঝে সরে গিয়েছেন গৌতম দেব। তিনি বলেন, “মেয়র পদ নিয়ে কাড়াকাড়িতে কংগ্রেস-তৃণমূল দ্বন্দ্বের কথা শিলিগুড়ির অজানা নয়। এটাও জানে অশোক ভট্টাচার্য কতটা কাজের। সেটাই আমাদের অ্যাডভ্যান্টেজ।”
মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন অশোক ভট্টাচার্য।—নিজস্ব চিত্র।
দল প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে তিনিই মেয়র পদপ্রার্থী বলে শিলিগুড়ি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার শুরু করেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শেষ পর্যন্ত অবশ্য টিকিট পাননি। মেয়রের দৌড় থেকে তিনি সরে যাওয়ায় এখন দলের অন্দরের চর্চা, শাসক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে গৌতমবাবুর স্ত্রী শুক্লাদেবীই কি মেয়র পদপ্রার্থী, নাকি সেই লড়াইয়ে রয়ে যাবেন নান্টু পাল, প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রতুল চক্রবর্তীরা।
শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে তৃণমূলের জোট-সঙ্গী কংগ্রেস এ বার এখনও সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি। অচিরেই ফাঁকা আসনে প্রার্থী দেওয়ার দাবি করলেও এ দিন ২২টি আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছে কংগ্রেস।
লোকসভা নির্বাচনে ২২টি ওয়ার্ডে এগিয়ে থাকলেও প্রার্থী হতে না পারায় বিজেপি-র ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের অসন্তোষ সামাল দিতে জেরবার দল। কর্মীদের অনেকেরই অভিযোগ, টাকা নিয়ে প্রার্থী পদ বিলিয়েছে নেতারা।
এই অবস্থায়, বামেরা যেন বাড়তি মনোবল পেয়ে গিয়েছে। অশোকবাবুও দলের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করতে তাঁর চেনা ‘ভোকাল টনিক’ দিয়ে চলেছেন। তাঁর কথায়, “দল ওঁকে (গৌতম দেব) টিকিট দিল না, নাকি বেগতিক বুঝে উনি রণে ভঙ্গ দিলেন, তা বোঝা গেল না। আমি দুই দশকের বেশি মন্ত্রী থেকেও এ বার দাঁড়িয়েছি। প্রথম রাউন্ডে আমরা এগিয়েই আছি।”