নজর: এখানেই ধস নামে ফুটপাতে। নিজস্ব চিত্র
কলকাতায় মাঝের হাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে রাজ্য জুড়ে নাড়াচাড়া শুরু হয়েছিল। স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়েছিল কয়েকটি সেতুর। কিন্তু তার পরে পরিস্থিতি যে কে সেই। কলকাতায় এখন সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে কড়া নজর হলেও উত্তরবঙ্গে ততটা হচ্ছে না। যেন তারই মাশুল গুনল জলপাইগুড়ির তিস্তা সেতু। জলপাইগুড়ি শহরের সঙ্গে বাকি জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের রাস্তা এই সেতুটিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফুটপাতের কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ে গেল তিস্তা নদীতে। ফলে ব্যাহত হল পায়ে হেঁটে চলাচল। শেষে ট্র্যাফিক পুলিশ ব্যারিকেড লাগাল সেখানে।
১৯৬১ সালে জলপাইগুড়ি তিস্তা সেতু তৈরি হয়। ১৯৬৮ সালে জলপাইগুড়িতে ভয়াবহ বন্যায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পরে সেতুটি আপাদমস্তক গড়ে নিতে হয় সেতুটি। এটি লম্বায় প্রায় এক কিমি। তার পরেও প্রায় পঞ্চাশ বছর কেটে গিয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুটি দুর্বল হতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের দাবি, এখন বড় গাড়ি গেলে সেতুটি কাঁপে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে ভয় লাগে। সেতুর বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে বলেও অনেকেরই দাবি। দ্রুত সংস্কার করা না হলে যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে, অভিযোগ গ্রামবাসীর।
এ দিন দুপুরে তিস্তা সেতুর মাঝে ফুটপাতের কিছুটা অংশ ভেঙে গিয়ে সকলের দুশ্চিন্তাই বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লোহার রড মর্চে ধরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার ফলেই ভেঙে গিয়েছে ফুটপাতের একটি অংশ। স্থানীয় বাসিন্দা সত্যেন রায় বলেন, ‘‘মাঝে মধ্যে সেতুর ছোটখাট অংশ ভেঙে পড়ে। সব সময় চোখেও পড়ে না। আজ অনেকটা ভেঙে পড়ায় সকলের নজর পড়েছে। তাও পুলিশ ছিল বলে বড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।’’ তাঁর দাবি, এখনই সেতুর সংস্কার করা প্রয়োজন।
হাইওয়ে ট্র্যাফিকের ওসি দেবদুলাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘খবর পেয়ে ছুটে এসেছি। ব্যারিকেড লাগিয়ে দিলাম যাতে দুর্ঘটনায় না হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
সেতুর ইতিহাস শোনাতে গিয়ে ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা বলেন, ‘‘১৯৬৮ সালের বন্যার পরে সেতুটি বড় করে তৈরি করা হয়।’’ একই সঙ্গে এর রক্ষণাবেক্ষণের উপরে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেটা খুবই জরুরি।’’
ফুটপাতে ব্যারিকেড লাগানোয় মানুষজন তো বটেই, সাইকেল চলাচলেও অসুবিধা হচ্ছে। সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। ম্যানেজার অনন্ত লাল বলেন, ‘‘দ্রুত ভাঙা অংশ সংস্কার করতে উদ্যোগী হচ্ছে সংস্থা।’’