কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী।
সামনে পুরভোট। তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মালদহ সফরে আসছেন মার্চের প্রথমেই। তার আগে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে নিয়ে জল্পনা উস্কে দিলেন দক্ষিণ মালদহের কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু)।
তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা আগে আমাদের কংগ্রেসে ছিলেন, দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা ফের দলে আসার চিন্তাভাবনা করছেন। কৃষ্ণেন্দু আমাদের বাড়িতে আসছেন। আমরাও ওঁর বাড়িতে যাচ্ছি। কথা হচ্ছে। সদ্ভাব আমাদের আছেই। দলে এলে আমরা নিয়ে নেব।’’ কৃষ্ণেন্দু অবশ্য ডালুর বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের সঙ্গে আমাদের পারম্পরিক সম্পর্ক। কিন্তু কংগ্রেসে যাওয়ার ব্যাপার কেন বলেছেন তা উনিই বলতে পারবেন। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হয়েই আছি।’’
মালদহের রাজনীতিতে কৃষ্ণেন্দু বরাবরই ব্যতিক্রমী। তিনি আগে কংগ্রেসে ছিলেন। মাঝে তৃণমূলে গিয়ে দলের জেলা সভাপতিও হন। কিন্তু ফের কংগ্রেসে ফিরে বিধায়ক হন। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে কংগ্রেসের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেন। ইংরেজবাজার আসন থেকে বিধায়ক হয়ে মন্ত্রীও হন। পাশাপাশি তিনি ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানও ছিলেন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই সময়ে কৃষ্ণেন্দু ও জেলার আর এক মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের ‘বিরোধ’ রাজনীতিতে ভিন্ন মাত্রা দেয়। তা থামাতে দলনেত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণেন্দু হেরে যান বাম ও কংগ্রেস সমর্থিত প্রার্থী নীহাররঞ্জন ঘোষের কাছে। পরের বছর পুরপ্রধানের পদেও ইস্তফা দিতে হয় তাঁকে। নীহার হন পুরপ্রধান।
জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, সেই থেকে পুরসভা পরিচালনা নিয়ে কৃষ্ণেন্দু-নীহার ‘দ্বন্দ্ব’ জেলার রাজনীতিতে বহুলচর্চিত। কৃষ্ণেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, নীহার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে কৃষ্ণেন্দু দলে অনেকটাই কোণঠাসা। এরইমধ্যে কৃষ্ণেন্দু বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলেও গুঞ্জন ওঠে। যদিও কৃষ্ণেন্দু তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।
এ বার কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা তথা সাংসদ ডালু কৃষ্ণেন্দুকে নিয়ে জল্পনা ফের উস্কে দিলেন। বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন ডালু। তার আগে তিনি বলেন, ‘‘দলে আসার সিদ্ধান্ত ওদের নিতে হবে। প্রস্তাব এলে নিশ্চয়ই তা বিবেচ্য হবে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘কংগ্রেস এখন সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে। ফলে ওই দলের কে কী বলছেন তা নিয়ে আমরা ভাবি না। কৃষ্ণেন্দুবাবু আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাঁকে নিয়ে কংগ্রেস যা বলছে তা বাজারের চমক ছাড়া কিছু নয়।’’