কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী।
করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত প্রশাসনিক বৈঠকে তীব্র বাদানুবাদে জড়ালেন প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী ও ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা পুর-প্রশাসক নীহাররঞ্জন ঘোষ। জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার শহরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলায় রবিবার দুপুরে প্রশাসনের তরফে জেলাশাসকের কনফারেন্স রুমে ওই বৈঠক ছিল। শেষ পর্যন্ত জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও সভায় হাজির পুলিশ, ব্যবসায়ী মহলের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি সামাল দেন।
এ দিকে, শহরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলায় এই আনলক পর্বে বেশ কিছু বিধি আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, ৩০ জুন, মঙ্গলবার থেকে ইংরেজবাজারে মাছ ও আনাজ বাজার সকাল ১০টার পরে বন্ধ হবে। অন্য দোকানপাট বন্ধ হবে বিকেল ৩টেয়। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ফুটপাতে দোকান বসতে দেওয়া হবে না। এলাকার বাজারগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি ক্রেতা ও বিক্রেতার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হবে বলে খবর।
আর এ দিনের এই সব সিদ্ধান্ত কার্যকর করতেই ইংরেজবাজারে ৬টি ও পুরাতন মালদহ শহরে ৩টি নজরদারি দল গঠন করা হবে। দলে থাকবেন প্রশাসন, পুলিশ, পুরসভা ও জেলা বণিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ইংরেজবাজারে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪ জন ও পুরাতন মালদহ শহরে ১০ জন।
গত পাঁচ বছরে ইংরেজবাজার পুরসভা পরিচালনা নিয়ে কৃষ্ণেন্দু-নীহার তরজা বহুল চর্চিত। পুরসভা সূত্রেই খবর, বিভিন্ন বোর্ড মিটিংয়ে দু’জনকে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে বারবার। এ দিন করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনিক বৈঠকে তাঁদের
বচসা নিয়ে কৃষ্ণেন্দুর অভিযোগ, ‘‘সভায় অন্যরা যখন বক্তব্য রাখেন, তখন আমি কথা বলিনি। কিন্তু আমি যখন বালুচরে ইংরেজবাজার পুরসভার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের দোতলা অংশটিকে কোয়রান্টিন সেন্টার করার কথা বলছিলাম তখন নীহার বাধা দেন। তারই প্রতিবাদ জানিয়েছি আমি।’’
পাল্টা নীহারের অভিযোগ, ‘‘ওই দোতলার একটি ঘর দখল করা ছিল। পরে তা দখলমুক্ত করা হয়। পুরো অংশটি নেয় সরকারি হোম কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে হোম স্থানান্তরিত হলেও ভবনটির চাবি হোম কর্তৃপক্ষের কাছেই আছে। এ কথা বলাতেই কৃষ্ণেন্দু উল্টোপাল্টা বলতে থাকেন।’’ দু’জনের এই বাকবিতণ্ডা নিয়ে প্রশাসনের কোনও কর্তা অবশ্য মন্তব্য করতে চাননি।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, শহরে সংক্রমণ বেড়ে চলায় দোকানপাট খোলা-বন্ধ নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভায়। সেই সিদ্ধান্ত প্রশাসন, পুলিশ ও পুরসভার তরফে মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের জানানো হবে।