কোচবিহার সাগরদিঘি পাড়ে একসঙ্গে একদাবিতে মিছিল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সমর্থকদের। নিজস্ব চিত্র।
কেউ মোহনবাগানের সমর্থক, কেউ ইস্টবেঙ্গলের। ডার্বি ম্যাচ এলেই দুই প্রতিপক্ষ একে-অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান চোখা-চোখা কথার তিরে। মাঠে-ময়দানে তো বটেই, সামাজিক মাধ্যমেও যে লড়াই বার-বার সামনে উঠে এসেছে। আরজি কর-কাণ্ডের আবহে এক হয়ে গেল তাঁদের এই লড়াই। দোষীর শাস্তির দাবিতে পথে নেমে সবাই গর্জে উঠল একই স্লোগানে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ়।’
রবিবার সন্ধ্যায় কোচবিহারের সাগরদিঘি পাড় থেকে দিনহাটার সংহতি ময়দানে মিছিল হয়। যৌথ প্রতিবাদী মানব বন্ধনের মাধ্যমে প্রতিবাদে শামিল হন দুই ক্লাবের সমর্থকেরা। যাঁদের মুখে বার-বার উঠে এসেছে আরজি কর-এর প্রসঙ্গ। তাঁরা সকলেই বলেন, "এ ভাবে ডার্বি ম্যাচ বাতিল করে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে সরকার। তার বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ।" এ দিনের মিছিলে পাশাপাশি হাঁটেন ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সমর্থকেরা। পতাকা হাতে, প্ল্যাকার্ড হাতে এগিয়ে চলে মিছিল। সেই মিছিলেই ছিলেন আকাশজিৎ রায়। তিনি বলেন, "আমরা ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান সব দলের সমর্থকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছে। এ ভাবে স্বৈরতান্ত্রিক পরিচয় দিয়ে ডার্বি ম্যাচ বাতিল করা যায় না। আরজি কর হাসাপাতালে কোনও নিরাপত্তা নেই, অথচ ডার্বি ম্যাচে পুলিশ-পুলিশে ছয়লাপ করা হয়েছে।" দিনহাটায় সংহতি ময়দানে প্রতিবাদী মানব বন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাবের সদস্য শুভ্রালোক দাস। তিনি বলেন, "খেলা সৌভাতৃত্ববন্ধনকে আরও অটুট করে। তা বন্ধ করে দিয়ে অসহিষ্ণুতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। যারা আরজিকরকে করকে রক্ষা করতে পাচ্ছে না তারা কি করে যুবভারতীর গেট রক্ষা করবে? ডার্বি অবিলম্বে হোক এটাই আমরা চাই।" কোচবিহার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক সুব্রত দত্ত বলেন, "প্রশাসন যেটা ঠিক মনে করেছেন, সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোচবিহারে সব স্বাভাবিক রয়েছে। সমস্ত খেলা নির্দিষ্ট নিয়মে হচ্ছে।" অলোক রায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা চলছে আলিপুরদুয়ার জংশন ইনস্টিটিউট গ্রাউন্ডে। কলকাতায় ডার্বি বাতিল হলেও আলিপুরদুয়ার জংশনে যুবসংঘ ক্লাব আয়োজিত গ্রিন বেঙ্গল অ্যাকাডেমি ও কালচারাল ইউনিটের মধ্যে রবিবারের এই খেলা অবশ্য হয়েছে। সেই খেলাতে এসেছে আর জি করের ঘটনার ছায়া। খেলার শুরু জাতীয় সংগীতের পাশাপাশি নিরবতা পালন করেন দুই পক্ষের খেলোয়ার, দর্শক, অতিথি ও ক্লাবের কর্মকর্তারা। ক্লাবের সম্পাদক চিন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “আরজি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি হোক, সেটাই আমরা চাই।”