ধৃত: ধর্ম পাসোয়ান। নিজস্ব চিত্র
পরপর কয়েক দিন একই গাড়িতে চেপে যাতায়াত এবং ঘনিষ্ঠ এক জনের মোবাইলে বারবার ফোন। এই দুই সূত্রই ধরিয়ে দিল পানশালা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ধর্ম পাসোয়ানকে। পুলিশ সূত্রে এমনটাই দাবি।
মঙ্গলবার রাত দু’টো নাগাদ কলকাতার ট্যাংরার একটি ফ্ল্যাটের বেল বাজায় পুলিশ। সূত্রের খবর, ধর্মের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি দরজা খোলে। পুলিশ তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে তল্লাশি চালাতেই ধর্মের নাগাল পায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, নিজের মোবাইল বন্ধ রাখলেও দু’দিন আগে জলপাইগুড়িতে এক ঘনিষ্ঠের মোবাইলে ফোন করেছিল ধর্ম। তাঁর মোবাইলে ফাঁদ পেতে রেখেছিল পুলিশ। ধর্ম ওই ব্যক্তিকে ফোন করে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছিল। তিনি পৌঁছনোর কিছু পরেই জলপাইগুড়ি পুলিশের দল পৌঁছয় ধর্মের ফ্ল্যাটে।
গত ১৬ জুলাই ধর্মের পানশালায় অভিযানের পরদিন দুপুরে ধর্ম জলপাইগুড়ি ছাড়ে বলে দাবি। তারপর থেকে কলকাতাতেই ছিলেন। বার কয়েক ডেরা পাল্টে পুলিশের চোখে ধুলোও দেন। কিন্তু ঘনিষ্ঠের মোবাইলে ফোন করে গত রবিবার ধর্ম পুলিশের নজরে চলে আসে। মোবাইল টাওয়ারের অবস্থানে পুলিশ জানে, ট্যাংরা এলাকাতেই ধর্ম রয়েছে। শুরু হয় নজরদারি। পরপর তিন দিন ধর্মকে ট্যাংরার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। পুলিশের নজরে আসে প্রতিবারই একই গাড়িতে যাতায়াত করছে ধর্ম। মঙ্গলবার সেই গাড়ির চালককে খুঁজে বের করে পুলিশ। তারপর ধর্মের ঠিকানা পেতে বেশি সময় লাগেনি।
জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদীর কথায়, “বহু সূত্রকে কাজে লাগাই। তাতেই মূল অভিযুক্তকে ধরা গিয়েছে।”
ধর্মকে ধরার পরের ঘটনাও নাটকীয়। বুধবারেই জলপাইগুড়ির জেলা আদালতে ধর্ম পাসোয়ানের আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। একবার আগাম জামিন পেয়ে গেলে ধর্মকে গ্রেফতার করতে পারত না পুলিশ। মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রেফতারের পর রাত তিনটেতেই ধর্মকে নিয়ে সড়ক পথে জলপাইগুড়ির পথে রওনা দেয় পুলিশ। পরিকল্পনা ছিল এ দিনই ধর্মকে জেলা আদালতে তোলা হবে। উত্তর দিনাজপুরে ঢুকে যানজটে আটকে যায় পুলিশের গাড়ি। পথে ইসলামপুর আদালতে ধর্মকে হাজির করে একদিনের ট্র্যানজিট রিমান্ড নেয় পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার ধৃত ধর্মকে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হবে।