প্রতীকী ছবি।
দিন কয়েক ধরে চলছে টানা প্রচার। লক্ষ্য, লক্ষাধিক লোকের মিছিল করে দলের সাংগঠনিক শক্তি প্রমাণ করা। আজ, মঙ্গলবার রাজ্য ভাগের চক্রান্তের অভিযোগে কোচবিহারে মহামিছিল করবে তৃণমূল। তার ঠিক এক দিন আগে, ‘অডিয়ো-বার্তা’য় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) তৃণমূল নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজ়েশন’-এর প্রধান জীবন সিংহ। তৃণমূল নেতাদের নিশানা করে জীবনের ‘হুঁশিয়ারি’, কোচবিহার বা কামতাপুর বিরোধী কিছু তাঁরা মেনে নেবেন না। প্রয়োজনে, আক্রমণ করবেন। পুলিশ মনে করছে, রাজ্য ভাগের বিরোধীদের উদ্দেশ্য করেই ওই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জীবন। সব দিকে তাকিয়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, “সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তৃণমূল অবশ্য জীবনের ওই ‘হুঁশিয়ারিকে’ গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “আমরা মানুষের সঙ্গে রয়েছি। মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। সেটা বার বার প্রমাণ হয়েছে। আবারও হবে। যাঁরা লুকিয়ে থেকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তাদের কোনও লাভ হবে না। কারণ, ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ নেই।”
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, “এত কিছু করেও তৃণমূলকে দুর্বল করা যাচ্ছে না। যাবেও না। তৃণমূল আরও শক্তিশালী হবে।” এমনিতে দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ায় দলে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তার উপরে কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গে রাজ্যভাগের দাবি উঠছে বার বার। সূত্রের দাবি, সে পরিস্থিতিতে এ বার রাজ্য ভাগের বিরুদ্ধে পাল্টা ময়দানে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসক দল।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলার পাঁচ মহকুমা থেকে গাড়িতে কর্মী-সমর্থকদের আনা হবে। জেলা সদর মহকুমার কর্মী-সমর্থকরা অটো, টোটো, মোটরবাইক ও হাঁটা পথে মিছিলে যোগ দেবেন। কয়েকশো গাড়ি বুকিং করা হয়েছে দলীয় কর্মীদের আনার জন্য। বেলা ১২টার মধ্যে কোচবিহার রাসমেলার মাঠে সবাইকে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার এক ঘণ্টার মধ্যে সেখান থেকে মিছিল বেরোবে।
তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, মন্ত্রী উদয়ন গুহ, চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ ছাড়াও, জেলার সমস্ত শীর্ষ নেতাদের মিছিলে হাজির থাকার কথা রয়েছে। দল চাইছে, ওই মিছিল থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার বার্তা ছড়িয়ে দিতে। যাতে পঞ্চায়েত ভোটের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মনোবল বাড়ে। পুলিশ সকাল থেকে রাসমেলার মাঠ এবং শহরে প্রবেশের সমস্ত পথেই নজরদারি চালাবে। বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু অবশ্যবলেন, “মিছিল করে লাভ হবে না তৃণমূলের। কারণ মানুষ এই দলকে আর চাইছে না।”